তিন কূলে কেউ নেই, এমন ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাছাড়া এই ধরণের নাগরিকের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দিলে বেড়ে যায় বিমার সংখ্যা। যার ফলে বাড়ে সরকারের খরচ। তাই ‘সিঙ্গল’দের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দিতে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করছে স্বাস্থ্য দফতর। আর তাতেই বেঁধেছে বিপত্তি।
গোটা রাজ্যে প্রায় ১০ লক্ষ ‘সিঙ্গল’ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আবেদন জমা পড়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এদের কার্ড দিলে খরচ বেড়ে যাচ্ছে কয়েকগুণ। ওদিকে অনেকেই অন্য পরিবারের অন্তর্ভুক্ত হলেও পারিবারিক বিবাদের কারণে সিঙ্গল কার্ড আবেদন করছেন। এদের কার্ড দিলে একই ব্যক্তির জন্য দুবার করে বিমার টাকা দিতে হচ্ছে সরকারকে। ওদিকে সিঙ্গল কার্ড নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও অভিযোগ। তাই একজন ব্যক্তির জন্য একটি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দিতে ভালো করে নথি খতিয়ে দেখছে স্বাস্থ্য দফতর। গোটা রাজ্যেই পরিস্থিতি একই রকম।
কলকাতা পুরসভার এক কাউন্সিলর জানিয়েছেন, তাঁর ওয়ার্ডে অন্তত ৪ জন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সিঙ্গল আবেদনকারী রয়েছেন। তাঁদের কবে কার্ড পাবেন জানতে চাইলে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জবাব দেওয়া হয়েছে, আপনার পরিবারে এদের অন্তর্ভুক্ত করে নিন। কিন্তু কত জনকে আমি নিজের পরিবারে অন্তর্ভুক্ত করব?
এরকম এক আবেদনকারীর কথায়, আমার তিন কূলে কেউ নেই। স্বামীর পেশনের টাকায় দিন কাটে। রোগ বালাই হলে কোথায় যাব? আমারই তো কার্ডটা সবার আগে দরকার। কিন্তু কার্ড হাতে পাচ্ছি কই?
স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে কেবলমাত্র পরিবারকেই কার্ড দেওয়া হয়। কোনও ব্যক্তিকে কার্ড দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে অনেকে পরিবারের অন্তর্ভুক্ত হয়েও আলাদা করে কার্ডের জন্য আবেদন করছেন। এদের চিহ্নিত করতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর, কোনও ‘সিঙ্গল’ আবেদনকারী কোনও পরিবারের অন্তর্ভুক্ত কি না তা খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া জটিল। তাছাড়া এব্যাপারে কোনও ভুল হলে সরকারি কর্মীদের শাস্তির মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সিঙ্গল আবেদনকারী দেখলেই ফিরিয়ে দিচ্ছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা।