গত অগস্ট থেকে ভুয়ো পাসপোর্টচক্রের তদন্ত চালাচ্ছে কলকাতা পুলিশের সিট। এখনও পর্যন্ত এই চক্রের জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে সিট। তদন্তে নেমে সিটের আধিকারিকরা সরকারি স্তরে গাফিলতি খুজে পেয়েছেন। বিশেষ করে পাসপোর্ট যাচাই স্তরেই সবচেয়ে বেশি গলদ রয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। এই অবস্থায় কারা এই গাফিলতির সঙ্গে জড়িত তা জানতে চাইছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: আধার সেবা কেন্দ্রও কি জড়িত? জাল পাসপোর্ট কাণ্ডে নয়া মোড়
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, জাল পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে ৭৩টি জাল আধার কার্ড ব্যবহার করা হয়েছে। তাতেই আবেদনে বেশ কিছু অসঙ্গতি খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। তদন্তকারীদের সন্দেহ, যে আধার কেন্দ্রের কিছু কর্মীর অংশগ্রহণ ছাড়া এই ধরনের কাজ সম্ভব নয়। এক তদন্তকারী আধিকারিক জানিয়েছেন, সমস্ত নথি এবং তথ্য পাওয়া গেলে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। যাদের মধ্যে রয়েছে- বারাসতের বাসিন্দা সমরেশ বিশ্বাস এবং তাঁর ছেলে রিপন বিশ্বাস। এ ছাড়া রয়েছেন ডাকঘরের দুই কর্মী তারকনাথ দাস এবং দীপক মণ্ডল। পুলিশ দাবি করেছে, ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের মাস্টারমাইন্ড সমরেশ কীভাবে তার নিজের পরিবারের সদস্যদেরকে তার গ্যাং চালানোর জন্য ব্যবহার করেছিল। এমনকী তার ছেলে রিপন তার চোখ এবং কানের মতো কাজ করেছিল। শুধু তাই নয়, তার স্ত্রী রেখা ভারতীয় পরিচয়পত্র ইস্যু করা কেন্দ্রগুলিতে বাংলাদেশিদের গাইড করার জন্য কুরিয়ার হিসাবে কাজ করছিলেন। এছাড়াও গ্রেফতার করা হয়েছে ভুয়ো নথি তৈরির কাজে বিশেষজ্ঞ দীপঙ্কর দাসকে। তবে হরিদেবপুরের আরও এক যুবকের এর সঙ্গে জড়িত থাকার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তবে সেই যুবক পলাতক।
এর পাশাপাশি ঠিক কতগুলি ভুয়ো পাসপোর্ট ডাকঘরগুলিতে আবেদন করার পর তৈরি হয়েছে তা জানতে চাইছেন আধিকারিকরা। এর জন্য সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। পাশাপাশি এইসব পাসপোর্টের তথ্য যাচাইয়ের জন্য কারা জড়িত ছিলেন তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
লালবাজার সূত্রে জানা যাচ্ছে, সাধারণত পাসপোর্টের তথ্য যাচাইয়ের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা থাকে পুলিশের। তাহলে ভুয়ো পাসপোর্টের ক্ষেত্রেও কি একইভাবে তা যাচাই হয়েছিল? কারা সেই তথ্য যাচাই করলেন? কতগুলি পাসপোর্ট এভাবে তৈরি হয়েছে। সেই সমস্ত তথ্য জানার চেষ্টা করছেন আধিকারিকরা।