আজ, রবিবার সকালে বিসি রায় শিশু হাসপাতালে দুই শিশু মৃত্যুর খবর এসেছিল। আর দুপুর গড়াতেই সেই সংখ্যাটা পৌঁছে গেল ছয়ে। আর এখন হাসপাতাল জুড়ে শুধু মায়েদের বুক–ফাটা কান্নার রোল। এখনও সেখানে বহু শিশু ভর্তি। সুতরাং আতঙ্কের মধ্যেই সকলে প্রহর গুনছেন। এটা একদিনে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ শিশু মৃত্যু। এই নিয়ে টানা ৯ দিনে ৪০ শিশুর মৃত্যু হল কলকাতায়।
রবিবার সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৬ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে মহানগরীতে। একদল মায়েরা সন্তান হারিয়েছেন আর অন্যদল ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছেন সন্তান বাঁচানোর তাগিদে। এই পরিস্থিতিতে এখন অভিযোগ উঠছে,হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পর্যাপ্ত শয্যা নেই। তাই অনেক শিশুকে বাধ্য হয়েই সাধারণ শয্যায় রেখে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। ফলে মৃত্যু বাড়ছে। শুধু বিসি রায় হাসপাতালেই মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জন শিশুর। রবিবার মৃত শিশুদের মধ্যে একজনের ‘ডেথ সার্টিফিকেট’–এ মৃত্যুর কারণ হিসাবে ‘অ্যাডিনোভাইরাল নিউমোনিয়া’র কথা বলা হয়েছে। তাহলে বাকিদের কি হয়েছিল? সেটা এখনও স্পষ্ট করেনি হাসপাতাল।
ভাইরাস হানায় রবিবারও ফিভার ক্লিনিকে শিশুদের দেখাতে আসছেন বাবা–মায়েরা। ফিভার ক্লিনিক বন্ধ থাকায় ইমার্জেন্সিতে চাপ বাড়ছে। হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। ফিভার ক্লিনিক বহির্বিভাগের মতো। ছুটির দিনে বন্ধ থাকে। রবিবার বা ছুটির দিনে অসুস্থতা নিয়ে কেউ এলে ইমার্জেন্সিতেই দেখাতে হয়। আজ মেটিয়াবুরুজ সংলগ্ন নাদিয়াল থানা এলাকার বাসিন্দা আতিফা খাতুনের মৃত্যু হয়েছে। মিনাখাঁ থানার অন্তর্গত চৈতল এলাকার এক শিশুও মারা গিয়েছে। নাম আরমান গাজি। তারপর থেকে একের পর শিশু মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসছে। সবার পরিচয় জানা যায়নি।
তবে রাজ্য সরকার বিষয়টিকে সিরিয়াসভাবে দেখছে বলে জানিয়েছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি আজ, রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রাণঘাতী জ্বর নিউমোনিয়া ২৪ ঘন্টায় আরও ছয় শিশুর মৃত্যু হয়েছে। দু’মাসে বেশ কয়েকজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে এটা আমরা দেখছি। এটা সবার হচ্ছে। সারা দেশে হচ্ছে। রাজ্য সরকার এই ব্যাপারটা খুব সিরিয়াসভাবে দেখছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এটা নিয়ে মিটিং করছেন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে। একটাই আমাদের ভাল খবর, গরমটা যথেষ্ট পড়েছে। নিউমোনিয়া বা আমাদের যে অ্যাডিনোভাইরাস এটার প্রকোপটা কমে এসেছে।’
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup