লকডাউন শুরুর পর থেকে কেটে গিয়েছে ৯ মাস। টানা এতদিন রোজগার বন্ধ এসএলও (সেল্ফ এমপ্লয়েড লেবার অর্গানাইজেশন) শ্রমিকদের। তাঁদের নিয়েই সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বৈঠক ডাকে রাজ্যের শ্রমি দফতর। শ্রমিকরা ভেবেছিলেন, দীর্ঘ সমস্যার সুরাহা হবে। কিন্তু তা না হওয়ায় এদিন বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন তাঁরা। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও শ্রম দফতরের মন্ত্রী মলয় ঘটকের সামনেই বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সামনে ও ভেতরে চলে ভাঙচুর। এদিন বিকেলে স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তায় শয়ে শয়ে শ্রমিক অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হন। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় বলে অভিযোগ।
জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক যাঁরা সামাজিক সুরক্ষার ফর্ম ফিল আপ করেন সেই শ্রমিকদের সঙ্গে এদিন বৈঠক ডাকে শ্রম দফতর। তাঁদের কোনও বাধাধরা বেতন নেই। প্রতিটি ফর্ম ফিল আপ করে ২ টাকা করে কমিশন পেতেন তাঁরা। সেটাই রোজগার। কিন্তু লকডাউন চালুর পর এপ্রিল মাস থেকে সেটাও বন্ধ। এমনই অভিযোগ ওই শ্রমিকদের। জানা গিয়েছে, এদিনের বৈঠকে তাঁদের চাকরির ক্ষেত্রে বেতন কাঠামো ও সামাজিক সুরক্ষার কথা ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু অভিযোগ, তার কিছুই হয়নি।
এদিন বৈঠকে অংশ নিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শ্রমিকরা আসেন। কিন্তু বৈঠকে তাঁদের দাবিদাওয়া মানা হয়নি বলে অভিযোগ। তাঁদের যা সমস্যা তার কোনও সমাধানসূত্রও দেওয়া হয়নি। জানা গিয়েছে, মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বক্তব্য রেখে বেরিয়ে যাওয়ার পরই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। শ্রমিকদের কোনও দাবিদাওয়া না মানা হলে এর প্রতিবাদে এদিন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নেতাজি ইন্ডোর চত্বর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া তোরণ, হোর্ডিং, ফ্লেক্স ভেঙে ফেলেন বিক্ষোভকারীরা। নেতাজি ইন্ডোরের ভেতরেও চেয়ার ছোড়াছুড়ি হয়। ভাঙচুর চলে। তাও মন্ত্রীদের সামনেই।
এক বিক্ষোভকারী অভিযোগ করে জানান, ‘দীর্ঘ ৯ মাস আমাদের কোনও রোজগার নেই। আগে কমিশনের যা টাকা পেতাম তা দিয়ে সংসার চলত। কিন্তু লকডাউনের পর থেকে আমরা একটা টাকাও পাইনি। মলয় ঘটক আমাদের কথা দিয়েছিলেন যে এসএলও পরিবার ও অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে আজকের বৈঠকে একটা সমাধানসূত্র বের হবে। কিন্তু তিনি এদিন দলের হয়ে, সরকারের হয়ে প্রচার করে গেলেন। আমাদের বেতন দেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু কিছুই হয়নি।’