জয়দীপ ঠাকুর
ফুলবাগানে শাশুড়িকে হত্যা করে জামাইয়ের আত্মহত্যার ঘটনায় তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই উঠে আসছে সব চাঞ্চল্যকর তথ্য। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা বুধবার জানিয়েছেন, অন্তত ৬ মাস ধরে স্ত্রী-সহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের খুনের পরিকল্পনা করছিলেন অমিত আগরওয়াল। সেজন্য গাড়ি দুর্ঘটনা থেকে সুপারি কিলার নিয়োগ, বা বিষধর সাপের কামড়ে মৃত্যু, কোনও পরিকল্পনাই বাদ দেয়নি সে। শেষে কাউকে বিশ্বাস করতে না পেরে নিজেই খুন করার মনস্থ করে অমিত।
অমিতের ব্যাগ থেকে যে ৬৭ পাতার সুইসাইড নোট পুলিশ উদ্ধার করেছে তার ছত্রে ছত্রে রয়েছে রোমাঞ্চ। ‘মহাভারত অফ মাই লাইফ’ নামে ওই চিঠির ৬৭ পাতার মধ্যে ৬৬ পাতাই টাইপ করা। ১ পাতা নিজে হাতে লিখেছেন অমিত। তা থেকে গোয়েন্দারা নিশ্চিম, অন্তত ৬ মাস ধরে স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের খুনের পরিকল্পনা করছিলেন অমিত।
সুইসাইড নোটে তিনি লিখেছেন, স্ত্রীকে খুনের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটানোর কথা ভেবেছিলেন, তার পর বিহার গিয়েছিলেন সুপারি কিলার খুঁজতে। সাপের কামড়ে স্ত্রীকে খুন করতে তামিলনাড়ু গিয়েছিলেন বিষধর সাপ কিনতে। কিন্তু লকডাউনে সব পরিকল্পনা বানচাল হয়ে যায়।
এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাউকে বিশ্বাস করতে না পেরে নিজেই স্ত্রীকে খুনের মনস্থ করেন অমিত। বেঙ্গালুরু ও কলকাতায় ফ্ল্যাট রয়েছে তাঁর। কলকাতায় শ্বশুরবাড়ির কাছেই তাঁর ফ্ল্যাট। ঘটনার দিন প্রথমে সেখানে যান অমিত। সেখানে আগেই একটি আগ্নেয়াস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিলেন তিনি। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে শাশুড়িকে খুন করে। শ্বশুরকে খুনের আগেই ফ্ল্যাট ছেড়ে পালান তিনি। এর পর আত্মঘাতী হন অমিত।
পুলিশের দাবি, শ্বশুরবাড়ির সমস্ত সদস্যকে খুনের পরিকল্পনা ছিল অমিতের। তাই দিন কয়েক আগে শালাকে ফোনে কলকাতা আসতে বলেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও কারণে কলকাতা এসে পৌঁছতে পারেননি শালা।