কয়েকদিন আগেই জনপ্রিয় গায়ক কেকে-র মৃত্যুতে নড়ে বসেছিল গোটা রাজ্য। প্রশ্ন উঠেছিল কলেজ ফেস্ট আয়োজনের টাকার উৎস নিয়ে। তবে কিছু দিনেই সেই বিতর্ক মিলিয়ে যেতে শুরু করেছে। এমন আবহে এবার নতুন করে এই নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্ক উসকে দিলেন দমদমের সাংসদ তথা তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা সৌগত রায়। সাংসদরে অকপট প্রশ্ন, 'এত টাকা আসে কোথা থেকে? ৩০, ৫০ লাখ টাকা কে দিয়েছে? হাওয়া থেকে তো আসে না।'
গত ৩১ মে নজরুল মঞ্চে গুরুদাস কলেজের অনুষ্ঠানের পর আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন কেকে। পরে হোটেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। তারপরই কলেজ ফেস্টের ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে এই ফেস্টের টাকার জোগান সংক্রান্ত প্রশ্ন উঠতে থাকে। যা নিয়ে একটা সময়ে বিশাল চাপে পড়ে যায় রাজ্যের শাসক দলের ছাত্র সংগঠন। এবার বরানগরের এক অনুষ্ঠানে এসে এই বিষয়ে প্রশ্ন তুললেন সৌগত রায়। তাঁর কথায়, 'এই রকম প্রচণ্ড খরচ করে বম্বে থেকে শিল্পী আনার কি খুব দরকার ছিল? এত টাকা দিয়ে এ সব করতে গেলে কারও না কারও কাছে সারেন্ডার করতে হয়। এলাকার মস্তান নয় তো প্রোমোটারের কাছে। প্রথমেই যদি সারেন্ডার করো, তা হলে বাকি জীবন লড়াই করবে কী করে?' এদিকে সৌগত রায়ের এই প্রশ্নে অস্বস্তিতে পড়েছে তাঁরই দল। সাংসদের প্রশ্নকে হাতিয়ার করে পালটা তোপ দেগেছে বিরোধীরা।
বিজেপির তরফে এই বিষয়ে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'সৌগত রায় যে রাজনৈতিক দলের সাংসদ, সেই দলই গ্রামেগঞ্জে সব জায়গায় এই ধরনের বিপুল অর্থ ব্যয় করে অনুষ্ঠান করছে। টাকাটা কোথা থেকে আসছে? আজকে কেকে-র অনুষ্ঠানের জন্য ২৫ লাখ টাকা নিয়ে উনি প্রশ্ন তুলেছেন। এটা তো পশ্চিমবঙ্গব্যাপী ঘটছে। কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত এই একই দৃশ্য। কার উদ্দেশে প্রশ্ন করলেন সৌগত রায়? কেনই বা করলেন? এই ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে। এই টাকা কোথা থেকে আসছেন সেটা উনি জানেন না?'
এদিকে এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'কেকে-র মৃত্যুর পর এই প্রশ্নটাই করেছিলাম আমরা। কলেজে ভোট হয়নি বেশ কয়েক বছর। কলেজের ইউনিয়নের কোনও অস্তিত্ব থাকার কথা নয়। তাহলে ইউনিয়নের নামে টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা এখনও বলাহ কেন? কলেজ কর্তৃপক্ষই বা এদের হাতে টাকা তুলে দেয় কী করে? এটা কি অনুপ্রেরণা? না কি এটা কলেজকে সামনে রেখে তোলাবাজি করা। আজকে সৌগতবাবু এই প্রশ্ন তোলাতে ভালো লাগছে।'