পরিবারে হৃদরোগের ইতিহাস আছে। কিন্তু দীর্ঘদিন সেভাবে নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা করেননি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বছর ১৮ আগে শেষবার শরীরের খুঁটিনাটি পরীক্ষা করিয়েছিলেন বলে সৌরভের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর। চিকিৎসকদের মতে, তার জেরে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সংকেত আগে হয়ত বুঝতে পারেননি সৌরভ।
গত শনিবার মুদৃ হৃদরোগে আক্রান্ত হন সৌরভ। তাঁর তিনটি ধমনীতে ব্লকেজ হয়। তার মধ্যে সেদিনই অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করে একটি স্টেন্ট। কিন্তু মাত্র ৪৮ বছরেই কীভাবে একজন প্রাক্তন আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। সৌরভকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কেউ ভাবতেই পারছেন না যে ওইটুকু বাচ্চা ছেলের এরকম একটা সমস্যা হতে পারে।’
আরও পড়ুন : বোঝা যাচ্ছে না সংকেত, নিঃশব্দে বিপদ বাড়াচ্ছে ‘সাইলেন্ট’ হৃদরোগ
একাংশের মতে, সৌরভের পরিবারে হৃদরোগের ইতিহাস আছে। একাধিকবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) বাবা চণ্ডী গঙ্গোপাধ্যায়। কম বয়সেই হয়েছিল বাইপাস সার্জারি। চিকিৎসকদের মতে, সেই কারণে সৌরভের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার একটা ঝুঁকি ছিল। তাই ৪০-এর ঘরে পৌঁছানোর পর সৌরভের আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। তাহলে হৃদরোগের আগাম সংকেত মিলত। বিশেষত ‘মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন’ বা 'নিঃশব্দ' হৃদরোগের ক্ষেত্রে উপসর্গ অত্যন্ত কম হয়। সেগুলি শারীরিক পরীক্ষা ছাড়া বুঝতে পারার সম্ভাবনাও কম।
কিন্তু নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে উঠতে পারতেন না সৌরভ। তুমুল ব্যস্ততার কারণেই সম্ভবত সময় পেতেন না বলে মত একাংশের। সৌরভের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, ২০০২-০৩ সাল নাগাদ শেষবার বিসিসিআই প্রেসিডেন্টের সম্পূর্ণ শারীরিক পরীক্ষা হয়েছিল। তারপরও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছিলেন সৌরভ। ২০০৮ সালে অবসর নেন। তা সত্ত্বেও খুঁটিনাটি শারীরিক পরীক্ষা হয়নি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, লিপিড প্রোফাইলের মতো শারীরিক পরীক্ষাগুলি নিয়মিত হয়নি। তা হলে হৃদরোগ এড়ানোও যেতে পারত বলে ধারণা চিকিৎসকদের।