এবার সরাসরি কলকাতা পুলিশের এক ওসির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল। যা নিয়ে এখন তুমুল আলোড়ন পড়ে গিয়েছে শহরে। এক গৃহবধূ এই অভিযোগ করেছেন। আর তা লিখিতভাবে থানায় জানিয়েছেন। ওই গৃহবধূ পেশায় অভিনেত্রী। তাঁকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছে ওই ওসি বলে অভিযোগ। ওই গৃহবধূ অভিনেত্রীর শ্বশুরবাড়ি বেগবাগানে। কিন্তু গোলপার্কে একটি আবাসনে নিজের পরিবার নিয়ে থাকেন। তাঁর স্বামী ২০২১ সালে নিখোঁজ হয়ে যান। স্বামীর খোঁজ পেতে ওই অভিনেত্রী প্রায়ই নানা থানায় গিয়ে সাহায্য চাইতেন। তখনই এই কলকাতা পুলিশের ওসির সঙ্গে পরিচয় হয়। আর গৃহবধূর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ।
ওই গৃহবধূ স্বামীর সন্ধান পেতে কখনও গোলপার্ক, কখনও বেকবাগান থানায় যেতেন। এই একের পর এক থানায় যাতায়াতের সুবাদে ওই অভিনেত্রীর সঙ্গে কলকাতা পুলিশের ওসির পরিচয় হয়। নিখোঁজ স্বামীকে খুঁজে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যায় ওই ওসি বলে অভিযোগ। ওই ওসি গোলপার্ক এলাকারই বাসিন্দা। নাম ইন্দ্রনীল তালুকদার। তিনি পেশায় কলকাতা পুলিশের অফিসার। ওসি পরিচয় দিয়েই অভিনেত্রীর সঙ্গে আলাপ করে। তারপর বাড়ি যাতায়াত শুরু হয়। কখনও নানা জায়গায় ডেকেও পাঠায়। তারপর শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করে ওই পুলিশকর্মী বলে অভিযোগ। সেটাই এবার ফাঁস হয়ে গেল।
আরও পড়ুন: বনগাঁয় পালিয়ে আসা তিন বাংলাদেশি হিন্দু গ্রেফতার, পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ আদালতের
এদিকে ওই নির্যাতিতা গৃহবধূর অভিযোগ, ইন্দ্রনীল তালুকদার তাঁকে আশ্বস্ত করেন যে, তাঁর স্বামীকে খুঁজে দেবেন। সবরকম সাহায্য করবেন। সেই সূত্রেই দু’জনের মধ্যে তৈরি হয় এক বন্ধুত্বের সম্পর্ক। ধীরে ধীরে সেই সম্পর্ক আরও গাঢ় হয়। ইন্দ্রনীল তালুকদার তাঁকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি পর্যন্ত দেন। কিন্তু কিছুদিন সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর জানা যায় যে, ইন্দ্রনীল তালুকদারের সঙ্গে বহু মহিলারই অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। গৃহবধূ, বিবাহবিচ্ছিন্না, পরকীয়া, বিধবা এমন নানা মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িত ইন্দ্রনীল। এই তথ্য জেনে ফেলার পর থেকেই শুরু হয় অত্যাচার। তখন বাধ্য হয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই নির্যাতিতা গৃহবধূ অভিনেত্রী।
অন্যদিকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পর থেকেই সেই অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে ওই ওসি। এমনকী ওই গৃহবধূ অভিনেত্রীকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার। তারপরেও হঠাৎ একদিন ওই পুলিশ অফিসার অভিনেত্রীর বেগবাগানের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে বলপূর্বক তাঁকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তারপর মারধরও করে বলে অভিযোগ। তখন রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু ওই অভিযুক্ত পুলিশকে গ্রেফতার করা হয়নি। বরং তাঁর উপর চাপ আসতে থাকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য।