বিশাল জাঁকজমকের মধ্যে দিয়ে বৃহস্পতিবার বিজেপি–র দুর্গাপুজোর সূচনা হল। দিল্লিতে বসেই দলীয় আয়োজনে কলকাতায় হওয়া শারদ উৎসবের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শাঁখ ও উলুর ধ্বনিতে ছড়াল বাঙালির নস্টালজিয়া। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র গলায় রবীন্দ্রসঙ্গীত। নাচলেন ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। সল্টলেকের ইজেডসিসি–র হলঘরে তখন হাজির বাংলা বিজেপি–র প্রায় সমস্ত শীর্ষ নেতারা। কিন্তু দেখা মিলল না দু’জনের। তাঁরা হলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ও অধ্যাপক বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে গেরুয়া শিবিরে তাঁরা নাম লেখালেও দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাঁদের দেখা মেলা ভার। কিন্তু দলের উদ্যোগে দুর্গাপুজো, যার উদ্বোধনে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী, সেই অনুষ্ঠানে তাঁদের না দেখতে পেরে নতুন করে তৈরি হয়েছে জল্পনা। উঠছে নানা প্রশ্নও। দু’জনকেই এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তবু তাঁরা এলেন না কেন?
সূত্রের খবর, বিজেপি–র আন্তরিকতা নিয়ে তাঁদের দু’জনের মনেই ধন্দ রয়েছে। পদ পেলেও দলে তাঁদের স্থান নিয়ে তাঁরা এখনও সন্দিহান। তৃণমূলে থাকার সময় যে কোনও বৈঠকে প্রথম সারিতে থাকতেন শোভন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রেখেছেন বৈশাখী। কিন্তু সেভাবে তাঁদের দু’জনকে বিজেপি–র কোনও সভায় দেখা যায়নি। তাই কি এদিনের অনুষ্ঠানে শুধু দর্শক হিসেবে উপস্থিত থাকতে নারাজ ছিলেন তাঁরা? উঠছে প্রশ্ন।
ওদিকে, বৃহস্পতিবার বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা এক ফেসবুক স্টেটাস জল্পনা আরও বাড়িয়েছে। তাতে তিনি জানিয়েছেন, পুজো উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর জন্য শাড়ি ও শোভনের জন্য কুর্তা–পাজামা পাঠিয়েছেন। বৈশাখীও পাল্টা শারদ উপহার পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। প্রয়াত জননেত্রী জয়ললিতা ভাইজ্যাগের এক গ্রামে তৈরি বিশেষ শাড়ি পরতেন। বৈশাখী এদিন জানান, সেই শাড়ি তিনি উপহার দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁর কথায়, ‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই ভালবাসার সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও নিবিড় হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
উল্লেখ্য, গত বছর মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ভাইফোঁটা নিতে গিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। গিয়েছিলেন চলচ্চিত্র উৎসবের অনুষ্ঠানেও। কিন্তু এবার বিজেপি–র দুর্গাপুজোর অনুষ্ঠানে গড়হাজির থেকে দলকে কী বার্তা দিতে চাইলেন শোভন? তা সময়ই বলবে।