রাজ্য – রাজ্যপাল সংঘাতের মধ্যেই শুক্রবার বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের সরাসরি সম্প্রচার স্থগিত করলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, এদিন রাজ্যপাল তাঁর ভাষণে রাজ্যের পক্ষে অস্বস্তিকর কিছু বলতে পারেন। এই অনুমান করেই রাজ্যপালের ভাষণ সরসারি সম্প্রচার বন্ধ করল সরকার।
রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন সরাসরি সম্প্রচারের কোনও রীতি নেই। তবে বাজেট অধিবেশনে শুরুতে রাজ্যপালের ভাষণ প্রতি বছরই সরাসরি সম্প্রচার হয় বিধানসভা থেকে। সেই ভাষণ লিখে দেয় সরকার। অবিকল ভাষণ পড়ে দেন রাজ্যপাল। এমন রীতিই চলে আসছিল এতদিন। কিন্তু জগদীপ ধনখড় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক যে তলানিতে ঠেকেছে তাতে এবার সম্ভবত অবিকল ভাষণ পড়বেন না রাজ্যপাল।
রাজ্যপাল ও রাজভবনরে তরফে ইতিমধ্যে সেই আভাসও মিলেছে। বৃহস্পতিবার শান্তিনিকেতনে মাঘ মেলার উদ্বোধনে গিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘সরকারের ভাষণ লেখার অধিকার রয়েছে তেমনই রাজ্যপালের নিজের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। তাই আমি আমার মত রাখতেই পারি। তবে কোনও ক্ষেত্রেই সাংবিধানিক নির্দেশ লঙ্ঘন করব না।’
রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে, বাজের অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপালের ভাষণ নিয়ে বেশ কিছু পরামর্শ পাঠানো হয়েছিল নবান্নে। তবে সরকারের তরফে তা মানা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে। রাজভবনের দাবি, রাজ্যপাল বিভিন্ন বিষয়ে সরকারকে যে পরামর্শ দিয়েছিলেন তার উল্লেখ চেয়েছিল রাজভবন। কিন্তু তা মানেনি সরকার।
ওদিকে সংবিধান বিশেষজ্ঞদের দাবি, সরকারের লিখে দেওয়া ভাষণ বদলের অধিকার রাজ্যপালের রয়েছে। তবে তার নজির নেই।
সম্প্রতি কেরল বিধানসভায় সরকারের লেখা ভাষণ পড়ার সময় CAA প্রসঙ্গ উত্থাপনের আগে সেরাজ্যের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান বলেন, সরকারের এই অবস্থানের সঙ্গে আমি সহমত নই। এদিন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় তেমন কিছু ঘটে কি না সেদিকে সবার নজর রয়েছে। অনেকের মতে, রাজ্য সরকার ইচ্ছা করলে এক লাইনের ভাষণও পড়াতে পারেন রাজ্যপালকে দিয়ে। সেক্ষেত্রে ওই একটি লাইনকেই সম্পূর্ণ ভাষণ বলে বিবেচনা করা হবে।