‘বিচারপতির কাছে কৃতজ্ঞ। উনি আমার কাছে ভগবানের সমান।’ শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর এমনই মন্তব্য করলেন ববিতা সরকার। যিনি স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) মাধ্যমে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগে অনিয়মের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন।
শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, অঙ্কিতার শূন্যপদে মামলাকারী ববিতাকে চাকরি দিতে হবে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে তাঁকে নিয়োগপত্র দিতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি। সেই নির্দেশের পর চোখে জল চলে আসে ববিতার। যিনি গত কয়েক বছর ধরে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: অঙ্কিতার ফেরৎ দেওয়া বেতনের টাকা পাবেন ববিতা, কী করবেন এই টাকা দিয়ে?
সেই নাছোড়বান্দা লড়াইয়ের শেষে জয়ের পর ববিতা বলেন, ‘আমার জন্য অবশ্যই খুব ভালো একটা খবর। বিচারপতির কাছে কৃতজ্ঞ। উনি আমার কাছে ভগবানের সমান। অর্থ নিয়ে কী করব আমি বুঝতে পারছি না। সামাজিক কল্যাণমূলক কাজে ব্যবহারের চেষ্টা করব।’ যে ববিতার দায়ের করা মামলার কারণেই চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা। যিনি বেআইনিভাবে শিক্ষকতা করছিলেন।
শুক্রবার মামলায় রায়
বেআইনিভাবে নিয়োগের জন্য গত মাসেই অঙ্কিতাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। যিনি কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা উচ্চ বিদ্যালয়ে 'শিক্ষকতা' করতেন। শুক্রবার হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যয় প্রশ্ন করেন, ববিতাকে কি নিয়োগ করা হয়েছে? তাঁকে কেন এখনও চাকরি দেওয়া হয়নি?
বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে কমিশনের আইনজীবী জানান, বেআইনিভাবে যে প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছিল, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরেই নিয়োগ শুরু হবে। তখন ববিতাকেও চাকরি দেওয়া হবে বলে জানান কমিশনের আইনজীবী।
সেই উত্তরের প্রেক্ষিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, 'লজ্জাজনকভাবে' মন্ত্রীর কন্যা অঙ্কিতাকে চাকরি দেওয়া হয়েছিলেন। অঙ্কিতার নাম বেআইনিভাবে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় ববিতার নাম ২১ নম্বরে নেমে গিয়েছিল। সেজন্য অঙ্কিতার শূন্যপদে ববিতাকে নিয়োগের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। হাইকোর্টের নির্দেশ, সোমবারের (২৭ জুন) মধ্যে ববিতাকে চাকরির সুপারিশপত্র দিতে হবে। মঙ্গলবারের মধ্যে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে সুপারিশপত্র পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তারপর ৩০ জুনের মধ্যে ববিতাকে নিয়োগপত্র দিতে হবে।