এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে 'মিডলম্যান' প্রসন্ন রায়ের ১৬৩ কোটি ২০ লাখ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। উল্লেখ্য, এই প্রসন্ন রায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে দাবি করা হয়। এই আবহে এখনও পর্যন্ত এই মামলায় কত টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে জানেন? রিপোর্ট অনুযায়ী, এসএসসি গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মোট ৫৪৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার সম্পত্তি ও নগদ বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। (আরও পড়ুন: আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডের 'সূত্র' ধরে হাজার হাজার কোটির দুর্নীতির খোঁজ পেল CBI?)
আরও পড়ুন: কিঞ্জলদের নামে ৪ কোটি তোলার অভিযোগ করা ডাক্তারের 'পর্দা ফাঁস'! সামনে নয়া 'তথ্য'
রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রসন্ন এবং তাঁর স্ত্রীর নামে থাকা পাঁচটি হোটেল, ১৭টি ফ্ল্যাট, দোকানের মতো বিভিন্ন সম্পত্তি ইডি বাজেয়াপ্ত করেছে। ইডি জানিয়েছে, বাজেয়াপ্ত হোটেল ও রিজর্টের মধ্যে রয়েছে - হাওড়ার চলন্তিকা রিজর্ট, সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল রিজর্ট, দীঘায় হোটেল মিলি, জলপাইগুড়িতে হোটেল মূর্তি, আলিপুরদুয়ারে ব্যাম্বু ভিলেজ রিজর্ট।
এর আগে কয়েক মাস আগে দাবি করা হয়েছিল, ৬ বছরে চাকরি বিক্রি করে প্রসন্ন রায়ের অ্যাকাউন্টে ৭২ কোটি টা ঢুকেছিল। ইডি সেই সময় দাবি করেছিল, এক জন চাকরিপ্রার্থী জোগাড় করে দেওয়ার জন্য মিডলম্যান হিসাবে প্রসন্ন রায় পেতেন দেড় লক্ষ টাকা। উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে একেবারে প্রথমে যারা গ্রেফতার হয়েছিলেন তাদের অন্যতম প্রসন্ন রায়। বিধাননগরে একটি গাড়ি ভাড়া দেওয়ার সংস্থার আড়ালে তিনি চাকরি বিক্রির চক্র চালাতেন বলে দাবি করে ইডি। টাকার বিনিময়ে প্রসন্ন রায়ের কর্মচারীদের তৈরি করা তালিকা সরাসরি পৌঁছে যেত এসএসসি উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়ক শান্তিপ্রসাদ সিংহের কাছে। অভিযোগ, প্রসন্নের পাঠানো সেই তালিকা মিলিয়ে অযোগ্যদের সুপারিশপত্র দিতেন শান্তিপ্রসাদ সিংহ।
অবশ্য প্রথম থেকেই ইডির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন প্রসন্ন। এই নিয়ে আদালতে তাঁর আইনজীবী দাবি করেছিলেন, প্রসন্ন রায় একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তাঁর একাধিক ব্যবসা রয়েছে। অবশ্য তদন্তে নেমে প্রসন্নের বিভিন্ন সংস্থায় ২৬ কোটি এক লক্ষ ৮৯ হাজার ৬৭২ টাকার খোঁজ পায় ইডি। সেই সময় প্রসন্ন দাবি করেছিলেন, এই টাকা কৃষিকাজ করে তিনি আয় করেছেন। আখ, পেঁপে, কলা, ক্যাপসিকাম, টম্যাটো, সর্ষে, নারকেল চাষ করে নাকি এত কোটি কোটি টাকা আয় করেছিলেন প্রসন্ন।
পরে প্রসন্ন, তাঁর স্ত্রী এবং ঘনিষ্ঠদের মোট ২৫০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস পাওয়া যায়। চার্জশিটে ইডির দাবি, অ্যাকাউন্টগুলিতে ৭২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। ইডি আরও জানায়, প্রসন্নের স্ত্রীর আয়ের অন্য কোনও উৎস নেই। তাঁর অ্যাকাউন্টেও দু’কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। এছাড়া ইডির দাবি, প্রসন্নের জমিতে কোনও চাষবাস হয়নি। এই আবহে এই মামলার তদন্তে প্রসন্ন এবং তাঁর স্ত্রীর নামে থাকা মোট ১৬৩ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানাল ইডি।