কিশোর ক্রিকেটারের রহস্যমৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ল এসএসকেএম হাসপাতালে। শনিবার থেকে নিখোঁজ ছিল ওই কিশোর। রবিবার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি সে। রবিবারই তার মৃত্যু হয়। ওই কিশোরের পরিবারকে না জানিয়েই তার দেহ মর্গে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। তারই ক্ষোভে ফেটে পড়েন কিশোরের পরিবারের সদস্যরা। পুলিশকে দেহ নিয়ে যেতে বাধা দেন পরিবারের সদস্যরা। পুলিশের সঙ্গে একপ্রস্ত হাতাহাতি হয়। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে খবর। খাদ্য বিষক্রিয়ার জেরে মৃত্যু বলে দাবি হাসপাতালের।
এদিকে মৃত কিশোর ক্রিকেটারের নাম দেব ঘোষ (১৫)। হাসনাবাদের নপাড়ার বাসিন্দা। নানা ক্লাবের জন্য ক্রিকেট খেলত সে। দেবের মায়ের দাবি, শনিবার সকাল ৬টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। কলকাতার টালিগঞ্জে খেলতে যাওয়ার কথা বলেছিল দেব। ৮টা থেকে আর হদিশ মেলেনি। মোবাইল ফোন সুইচ অফ মেলে। তখনই পরিবারের সদস্যরা হাসনাবাদ থানার দ্বারস্থ হন। কিন্তু পুলিশ জানায়, ২৪ ঘণ্টা না কাটলে তারা কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না। আর আজ, রবিবার পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে মৃত নাবালকের ঠাকুমার আঙুলে আঘাত লাগে এবং রক্ত বের হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, খাদ্যে বিষক্রিয়ার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল ওই কিশোর। শ্বাস নিতেও সমস্যা হচ্ছিল তার।
আরও পড়ুন: ‘প্রথমে আপনারা মানুষ তৈরি করুন’, হিন্দু বানানো–অস্ত্র রাখা নিয়ে সুকান্তকে পাল্টা ফিরহাদ
অন্যদিকে পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, সায়েন্স সিটিতে বাস থেকে নামার পর দেবকে কেউ বা কারা তুলে নিয়ে যায়। সেখানে মানিব্যাগ এবং মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। সেখানেই তাকে কিছু খাওয়ানো হয়েছিল। এসএসকেএম হাসপাতালে আনা হলে দুটো ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তখনও দেব সুস্থ ছিল। ডাক্তাররা জানান, খাবারে বিষক্রিয়া হয়েছে। আচমকা কেমন করে ওই যুবকের মৃত্যু হল সেটা নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা না করে দীর্ঘক্ষণ ফেলে রাখা হয় তাঁদের ছেলেকে বলে অভিযোগ। দেবের মায়ের দাবি, পরিবারকে না জানিয়ে দেহ মর্গে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগও আনা হয়েছে।
এছাড়া এসএসকেএম হাসপাতালের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, দেবের মৃত্যুর পর পরিবারকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখেই দেহ মর্গে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। তখনই পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন পরিবারের সদস্যরা। ছেলের মৃত্যুর সঠিক কারণ কেন তাঁদের জানানো হল না? সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন পরিবারের সদস্যরা। ছুটির দিনে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরে।