করোনার দ্বিতীয় কোপে কপালে ভাঁজ পড়েছে দেশের মানুষজনের। পরিস্থিতি ভয়াবহ বুঝতে পেরে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে। করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন চলছে। এই পরিস্থিতিতে কি ফের লকডাউনের পথে যাবে বাংলা? প্রশ্নটি উঠতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষের মনে। তবে শুক্রবার শহরে পা রেখে বিষয়টি রাজ্যের ঘাড়েই চাপালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর তার ফলে জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে।
এদিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন অবিজেপি রাজ্যগুলির ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে বলেছেন, ‘মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড় করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার থেকে বেশি রাজনীতি করছে। সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ হচ্ছে এই অবিজেপি রাজ্যগুলিতে। মহারাষ্ট্র, দিল্লি, ছত্তিশগড়ের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে সেখানকার করোনা পরিস্থিতি কতটা ভয়ঙ্কর।’ এই মন্তব্য সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী করেছেন বলে জোর বিতর্ক দানা বেঁধেছে। কারণ উত্তরপ্রদেশ, ত্রিপুরাতেও একই অবস্থা। তাহলে কেন শুধু অবিজেপি রাজ্যগুলিকে নিশানা করা হল? উঠছে প্রশ্ন।
অন্যদিকে, এই পরিস্থিতির মধ্যেই শুক্রবার কলকাতায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অমিত শাহ বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার তার শেষ নোটিশে জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণ ঠেকানো নিয়ে সবরকম সিদ্ধান্ত নিতে পারবে রাজ্য সরকার। কনটেইনমেন্ট জোন, সেমি কনটেইনমেন্ট জোন কিংবা রাজ্যে করোনা রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তার অধিকার ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ থেকে রাজ্য সরকারকে দেওয়া হয়েছে।’ অর্থাৎ লকডাউন ডাকতে চাইলে আর কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। রাজ্য সরকার নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়ে লকডাউন ঘোষণা করতে পারবে।
সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ফের লকডাউন করার চিন্তাভাবনা রয়েছে কেন্দ্রের। ওদের উদ্দেশ্য ছিল, লোকজনকে বাড়ি বের হতে না দেওয়া। আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি, লকডাউনের কোনও প্রয়োজন নেই। ভোট পরিস্থিতিতে লকডাউন ডাকলে নির্বাচন বন্ধ করে দিতে হবে। এই আশঙ্কা থেকেই মুখ্যমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেছিলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। কিন্তু এদিন সরাসরি রাজ্যের হাতে ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলে শাহ লকডাউনের সিদ্ধান্ত রাজ্যের ঘাড়েই চাপিয়ে দিলেন।
ইতিমধ্যেই দৈনিক করোনা সংক্রমণ ১ লাখ পার করেছে। ভোট প্রচারের সময়ে রাজ্যেও দৈনিক করোনা সংক্রমণ ২ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি বিচার করে বুধবারই প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ছোট কনটেইনমেন্ট জোনের উপরে জোর দিতে হবে, নাইট কার্ফু করা, পরীক্ষা বাড়াতে হবে এবং কোভিড টিকা দেওয়ার সংখ্যা বাড়াতে হবে। লকডাউনের কথা বলেননি প্রধানমন্ত্রী।