মাঝ রাতে শিক্ষক নেতা মইদুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে গিয়ে আদালতে ঢোঁক গিলল কলকাতা পুলিশ। শুক্রবার মইদুল ইসলামের করা আবেদনের শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানালেন, গ্রেফতার নয়, জিজ্ঞাসাবাদ করতে বৃহস্পতিবার রাতে বেলেঘাটায় মইদুল ইসলামের শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিল পুলিশ। সঙ্গে বিচারপতি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় মইদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হলে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণের সুযোগ পাবেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ শিক্ষক আন্দোলনের নেতা মইদুল ইসলামের শ্বশুরবাড়িতে হানা দেয় কলকাতা পুলিশের ২০০ জন কর্মী ও আধিকারিক। মইদুল সাহেবকে দরজা খুলে বাইরে আসতে বলে। কিন্তু বেরোননি তিনি। তাঁকে পুলিশ আধিকারিকরা চিৎকার করে জানান, তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু রাতে তিনি থানায় যাবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন। প্রায় ২ ঘণ্টার টানাপোড়েনের পর পুলিশবাহিনী এলাকা ছাড়লেও মইদুল সাহেবের শ্বশুরবাড়ির সামনে পাহারা বসে। শুক্রবার সকালে পুলিশের অতিসক্রিয়তার অভিযোগে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।
এদিনের শুনানিতে বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে মইদুল ইসলামের আইনজীবী সওয়াল করে জানতে চান, কী এমন ঘটেছিল যে মাঝরাতে একজন শিক্ষককে গ্রেফতার করতে হাজির হলেন ২০০ জন পুলিশকর্মী। জবাবে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, গ্রেফতার নয়, জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়েছিল পুলিশ।
এর পরই এই মামলায় একাধিক নির্দেশ দেন বিচারপতি মান্থার। জানিয়ে দেন, এব্যাপারে এখনই মইদুল সাহেবকে রক্ষাকবচ দেবেন না তিনি। তবে পুলিশ যদি তাঁকে গ্রেফতার করে তাহলে ফের আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণের সুযোগ পাবেন তিনি। এমনকী মামলাটির নিষ্পত্তিও করেননি বিচারপতি। ফলে এক্ষেত্রে ফের পুলিশের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ রয়েছে মইদুল সাহেবের কাছে।
এদিন আদালতের নির্দেশে খুশি মইদুল সাহেব। তিনি বলেন, ‘রাত ১১টার সময় ২০০ পুলিশকর্মী নিয়ে এসে পুলিশ আমার শ্বশুরবাড়ির দরজায় ধাক্কা দিয়েছে, লাথি মেরেছে। আমার শ্বশুরমশাইকে হুমকি দিয়েছে। আর অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতে বলছেন, পুলিশ নোটিশ দিতে এসেছে?’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি একজন শিক্ষক। কোনও দাগি অপরাধী নই যে মাঝরাতে পুলিশ আমার বাড়িতে হানা দেবে। সারাদিন পুলিশ বাড়ি ঘিরে রেখেছে।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘সারদা-নারদকাণ্ডে অভিযুক্তের বাড়িতে নোটিশ সাঁটিয়ে আসা গেলে আমাকে ই-মেলে নোটিশ দেওয়া গেল না কেন?’