ভোটপ্রচারে বলেছিলেন, কেন্দ্র টিকা কেনার অনুমতি দিলেই রাজ্যের ১০ কোটি বাসিন্দাকে বিনামূল্যে টিকা দেবে তাঁর সরকার। ক্ষমতায় ফেরার ১ মাসের মধ্যে বদলে গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুর। বুধবার নবান্নে তিনি সাংবাদিক বৈঠকে বললেন, ‘টিকা কেনা কেন্দ্রের দায়িত্ব। কেন আমাদের টিকা জোগাড় করতে বলছে তারা?’
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ভোটপ্রচারের মধ্যেই রাজ্যে চরম আকার নেয় করোনা সংক্রমণ। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে শেষ কয়েকদফার ভোটগ্রহণ একসঙ্গে করার দাবি ওঠে। কার্যত বন্ধ হয়ে যায় ভোটপ্রচার। নির্বাচনী প্রচারে গোটা এপ্রিল মাস জুড়ে প্রায় সমস্ত সভায় রাজ্যে টিকাকরণের স্লথগতির জন্য কেন্দ্রকে দায়ী করেন মমতা। বলেন, ‘আমি গত ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যগুলিকে টিকা কেনার অনুমতি দেওয়ার আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই অনুমতি আজও মেলেনি। রাজ্য সরকারকে অনুমতি দিলে রাজ্যের ১০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে টিকা দেব আমরা।’
ভোটের শেষলগ্নে গত ১৯ এপ্রিল রাজ্যগুলিকে টিকা কেনার অনুমতি দেয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কিন্তু তার পর থেকে একাধিকবার চেষ্টা করেও কোনও সংস্থার কাছ থেকে তেমন সাড়া মেলেনি বলে সূত্রের খবর। এমনকী গ্লোবাল টেন্ডার ডেকেও টিকা মেলেনি। তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর কিছু কোভ্যাক্সিন সেরাম ইন্সটিটিউটের থেকে কিনেছে রাজ্য সরকার। বাকি প্রায় পুরোটাই এসেছে কেন্দ্রের মাধ্যমে বিনামূল্যে।
রাজ্যের পক্ষে টিকা জোগাড় করা সম্ভব নয় বুঝে মঙ্গলবার দেশের সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি লেখেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। তাতে কেন্দ্রকে টিকা কিনে রাজ্যগুলিকে বিতরণ করার আবেদন জানান তিনি। এই নিয়ে বুধবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গতকাল রাতে নবীনবাবু আমাকে ফোন করেছিলেন। উনি ও কেরলের মুখ্যমন্ত্রী চান কেন্দ্রীয় সরকার বিনামূল্যে টিকা দিক। কেন্দ্রীয় সরকারকে কেন টিকা কিনতে বলছে? রাজ্য সরকার এটা করতে পারবে না। টিকা কিনে বিনামূল্যে রাজ্যগুলিকে বিতরণ করা উচিত কেন্দ্রের। এই প্রস্তাবে আমরা সহমত।’