গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদহে রাজ্যে ৯ জেলায় বেশ কিছু ব্লকে জলস্তর নেমে গিয়েছে। ফলে ওই সব জায়গায় প্রবল জলের চাহিদা দেখা দিয়েছে। সেই চাহিদা মেটাতে এবার জলের পাউচ বিলি করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। সেইসঙ্গে বাড়ি বাড়ি জলের গাড়ি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের তরফে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
রাজ্য প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ৯টি জেলার ৭২টি ব্লকে জলস্তর নেমে গিয়েছে। এরমধ্যে ৪২টি ব্লকের অবস্থা আশঙ্কাজনক ও ৩০টি ব্লকের অবস্থা আংশিক আশঙ্কাজনক। জেলাভিত্তিক যে রিপোর্ট বেরিয়ে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে মুর্শিদাবাদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। সেখানে ৪টি ব্লককে আশঙ্কাজনক হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আংশিক আশঙ্কাজনক হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে ১৩টি ব্লককে। এরপরই রয়েছে নদিয়া জেলা। সেখানে ৮টি ব্লককে আশঙ্কাজনক হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
৩টি ব্লককে আংশিক আশঙ্কাজনক হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। হুগলি জেলার অবস্থাও ভালো নয়। সেখানে ৬টি ব্লকের অবস্থা আশঙ্কাজনক ও ৩টি ব্লকের অবস্থা আংশিক আশঙ্কাজনক। এছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের অবস্থাও ভালো নয়। সেখানেও বেশ কিছু ব্লকে জলস্তর নেমে গিয়েছে। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয়, যে নয় জেলায় জলস্তর কমে গিয়েছে বলে বলা হচ্ছে, তার মধ্যে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও পশ্চিম বর্ধমান নেই। প্রশাসনরে মতে, সাধারণত গ্রীষ্মকাল এলেই এই তিন জেলায় জলের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। তবে এখনও পর্যন্ত এই তিন জেলায় জলের চাহিদা সেই জায়গায় গিয়ে পৌঁছোয়নি। তবে প্রশাসন কোনও রকম ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবরকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায় জানান, ‘গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টিপাত সেইভাবে হচ্ছে না। প্রয়োজনের তুলনায় কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় রাজ্যে বেশ কিছু গ্রামীণ এলাকায় পানীয় জলের অভাব দেখা দিয়েছে। যেখানে এই পানীয় জলের অভাব দেখা দিয়েছে, সেখানে জলের পাউচ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’ জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের এক আধিকারিক জানান, পূর্ব অভিজ্ঞতা অনুযায়ী যে সব জেলায় জলস্তর নেমে যেতে পারে, সেই সব জেলাতে যাতে পানীয় জলের জোগান দেওয়া যায়, সেই বিষয়ে দফতর প্রস্তুত রয়েছে।