ডায়মন্ডহারবারে অভিজিৎ দাসকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। এদিকে সেই অভিজিৎ বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছেন । জিতে গিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এদিকে সেই অভিজিৎ ওরফে ববিকে শোকজ করেছিল বিজেপি। বিজেপির রাজ্যসভাপতি সুকান্ত মজুমদার তাঁকে শোকজ করেছিলেন। আর সেই শোকজের জবাবে অভিজিৎ যে কথা লিখেছেন তা বিজেপির অস্বস্তি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিল।
ডাক মারফৎ অভিজিতের কাছে এসেছিল চিঠি। আর অভিজিৎ নিজে তার জবাব দিলেন একেবারে সল্টলেকের দফতরে গিয়ে। সেখানে তিনি বিজেপির সাংগঠনিক সংবিধানের নির্দিষ্ট কয়েকটি ধারা উল্লেখ করে দেখিয়ে দিয়েছেন যে তাঁকে যে শোকজ করা হয়েছে তা শৃঙ্খলাভঙ্গের শামিল। এমনকী তাঁর দাবি, রাজ্য নেতাদের এমন চিঠি পাঠানোর অধিকারই নেই।
সেই সঙ্গেই অভিজিৎ প্রশ্ন তুলেছেন তাঁকে যে শোকজ করা হয়েছিল সেটা তিনি হাতে পাওয়ার আগেই তার কপি ঘুরছিল সংবাদমাধ্যমের কাছে। এটা কীভাবে সম্ভব? এমনকী তিনি উল্লেখ করেছেন দলীয় সংবিধানে কেউ যখন পার্টির সিম্বলে লড়াই করেন তখন তার বিরোধিতা করাটাও শৃঙ্খলাভঙ্গের শামিল। সেই সঙ্গেই তিনি প্রশ্ন তুলেছেন জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে যখন অভিযোগ করেছিলাম তখন কেন রাজ্য সভাপতি পদক্ষেপ নেননি, পালটা সেই প্রশ্ন তুলেছেন অভিজিৎ। সেই সঙ্গেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় দলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোর সঙ্গে আমি যুক্ত নই, সেটা আগেই দলকে জানিয়েছিলাম।
অভিজিৎ দাসকে কেন শোকজ করা হয়েছিল?
সূত্রের খবর ডায়মন্ডহারবারে বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ দাস পরাজিত হয়েছিলেন। প্রায় সাত লাখের বেশি ভোটে এই কেন্দ্রে জিতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এদিকে তার পর থেকেই ভোট পরবর্তী হিংসার একাধিক ঘটনা হয়। কিন্তু সেই ঘটনার পরে বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল এলাকায় যায়। কিন্তু সেই প্রতিনিধিদলের সামনেই বিক্ষোভ দেখায় বিজেপিরই ঘরছাড়ারা।
এদিকে তখনই প্রশ্ন ওঠে বিজেপির প্রতিনিধি দলের সামনে কেন বিজেপির লোকজনই বিক্ষোভ দেখালেন? এরপরই অভিজিৎ দাসের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ ওঠে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, এই যে বিক্ষোভের ঘটনা তার পেছনে রয়েছে তাঁরই ইন্ধন। এরপরই কার্যত অস্বস্তিতে পড়েই ববিকে শোকজ করে দল।
এদিকে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল সুকান্ত শোকজ করলেও এই ববিকেই ফলাফল চ্য়ালেঞ্জ করে আদালতে যেতে বলেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু এই শোকজের প্রসঙ্গ কার্যত এড়িয়ে গিয়েছিলেন আগেই। শুভেন্দু বলেছিলেন, দুটো সম্পূর্ণ পৃথক বিষয়। ওই আসনে নানা কারচুপি করে জিতেছে তৃণমূল। তার জন্য আমি মামলা করতে বলেছি। যে কোনও দলের এমন নির্দল প্রার্থীও মামলা লড়ার জন্য সাহায্য চাইলে আমি দেব। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সামনে বিক্ষোভ দেখানো , শোকজের চিঠি এগুলি সাংগঠনিক বিষয়। আমি সেটা নিয়ে কিছু বলতে পারব না।
কিন্তু শোকজের জবাবে অনেক কিছু বললেন অভিজিৎ।
প্রসঙ্গত ২০১৪ সালেও অভিষেকের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন অভিজিৎ দাস। সেবার ৫ লক্ষের বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন অভিষেক। আর অভিজিৎ সেবারে পেয়েছিলেন মাত্র ২ লক্ষের কিছু বেশি ভোট। ২০০৯ সালেও এই আসন থেকেই লড়েছিলেন অভিজিৎ। সেবার তাঁর ঝুলিতে গিয়েছিল মাত্র ৩৭ হাজারের মতো ভোট। পরে ২০১৯ সালে টিকিট পাননি অভিজিৎ। তবে ২০২৪ সালে ফের তাঁকে টিকিট দিয়েছিল দল। এবারও হার।