অসংগঠিত শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন বেঁধে দিতে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্যে সরকার। রাজ্যের হাতে থাকা আইনি অধিকার কাজে লাগিয়েই এই উদ্যোগ নিচ্ছে নবান্ন। এল ফলে গৃহ পরিচারিকা ও পরিচারক-সহ সমস্ত অংসগঠিত শিল্পের শ্রমিকদের বেতনের ন্যূনতম হার হবে রাজ্য সরকার নির্দ্ধারিত।
১৯৪৮ সালের একটি আইনে রাজ্য সরকারকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে অংসগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন কত হবে তা ঠিক করে দেওয়ার। সেই আইনকে কাজে লাগিয়ে বাড়ির পারিচারক ও পরিচারিকার-সহ সমস্ত অংসগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের বেতন বেঁধে দেবে রাজ্য সরকার। গত ২২ নভেম্বর রাজ্য শ্রম দফতরের থেকে একটি গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, এ ব্যাপারের রাজ্যপালের থেকেও ছাড়পত্র মিলেছে। ফলে সরকারের কাছে আর কোনও বাধা নেই অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন স্থির করতে।
রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করলেই অসংগঠিত ক্ষেত্রে স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মীদের ন্যূনতম বেতন নির্দিষ্ট হবে। গৃহ পরিচারিকা-পরিচারক ছাড়াও দোকানের কর্মচারী, ঠান্ডা পানীয় উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি, বিস্কুট কারখানার শ্রমিক, ইলেকট্রনিক্স, গাড়ি যন্ত্রাংশ বিপণনের ও প্রচারের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদেরও ন্যূনতম মজুরি ঠিক করে দেবে রাজ্য সরকার।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী রাজ্যে সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ লক্ষ মহিলা ও পুরুষ গৃহ পরিচারিকা ও পরিচারক হিসাবে কাজ করেন। এর মধ্যে ৩০ লক্ষ মহিলা ও ২০ লক্ষ পুরুষ। মূল্যবৃদ্ধির বাজারে ন্যূনতম বেতন ঠিক করতে শ্রমিক-মালিক উভয় পক্ষের কথাই মাথায় রাখা হচ্ছে। এ নিয়ে বিস্তারিত আলাপ আলোচনা চলছে। সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে বাম আমলেও এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বেশদিন স্থায়ী হয়নি। কেন, তার কারণ খোঁজার চেষ্টা করছে নবান্ন।
তবে পঞ্চায়েত ভোটের আগে যদি এই ন্যূনতম বেতন ঘোষণা করে রাজ্য সরকার, তবে তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হবে বলে মনে করেছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ, গৃহ পরিচারক-পরিচারিকা থেকে অসংগঠিত শ্রমিকের একটা বড় অংশ আসেন গ্রামাঞ্চল থেকে। ফলে সরকারের এই সিদ্ধান্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলকে অনেকটাই সুবিধা দেবে।