সুনীতা উইলিয়ামসকে ভারতরত্ন দেওয়ার দাবি তুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফ্লোরিডার উপকূলে সুনীতারা নামার কয়েক ঘণ্টার পরেই বুধবার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, ভারতীয় বংশোদ্ভূত মেয়ে সুনীতাকে ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান 'ভারতরত্ন' দেওয়া উচিত। আটদিনের মিশনে গিয়ে যেভাবে সুনীতাদের ২৮৬ দিন মহাকাশে কাটাতে হয়েছে, সেজন্যও তাঁকে কুর্নিশ জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, সুনীতারা যখন মহাকাশে গিয়েছিলেন, তখন জানতে পেরেছিলেন যে মহাকাশযানে কোনও সমস্যা হয়েছে। সেই অবস্থায় তাঁদের ফিরিয়ে আনতে গেলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারত বলেও জানান মমতা। তবে দেরি হলেও শেষপর্যন্ত যে একেবারে সুরক্ষিতভাবে সুনীতারা পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন, সেজন্য স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে তিনি জানান, সুনীতাদের যে যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে, তা নিয়ে নিয়মিত খোঁজখবর নিতেন। এমনকী এখন মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়েও পড়াশোনা করছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
‘সুনীতা চাওলা’ বলেছেন মমতা, দাবি শুভেন্দুর
আর মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আবার দাবি করেন যে মমতা নাকি ‘সুনীতা উইলিয়ামসের’ পরিবর্তে ‘সুনীতা চাওলা’ (মুখ্যমন্ত্রী কল্পনা চাওলা নিয়েও কথা বলেন) বলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ‘এর আগে (মুখ্যমন্ত্রী) বলেছিলেন যে রাকেশ রোশন চাঁদে গিয়েছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী চাঁদে গিয়েছিলেন। এখনই বিধানসভায় বলেছেন যে সুনীতা চাওলা।’
গুজরাটের মেয়ে সুনীতা! জোর দিলেন শুভেন্দু
সেখানেই থামেননি শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘উনি (মমতা) তো পাঁচ বছর ধরে প্রচার চালাচ্ছেন যে গুজরাটি হটাও। গুজরাটি চলবে না। আর (গুজরাটের) মেহসানার সঙ্গে সুনীতা উইলিয়ামসের যোগ আছে। এসে বলছেন যে সুনীতা চাওলা। সুনীতা চাওলা কে, সেটা আমি খুঁজে পাচ্ছি না। আমরা তো ভোর থেকে আনন্দিত। আমরা সুনীতা উইলিয়ামসের জন্য (গর্বিত)।’
তিনি আরও বলেন, ‘(সুনীতা) মেহসানার মেয়ে, গুজরাটের মেয়ে, ভারতের মেয়ে। আমরা মেহসানার জন্য, গুজরাটের জন্য, ভারতের জন্য আনন্দিত। কিন্তু সুনীতা চাওলাটা কে? রবীন্দ্রনাথের (ঠাকুর) বাংলায়, (ঈশ্বরচন্দ্র) বিদ্যাসাগরের বাংলায়, বঙ্কিমচন্দ্রের (চট্টোপাধ্যায়) বাংলায়, শরৎচন্দ্রের (চট্টোপাধ্যায়) বাংলায় এই মূর্খ মুখ্যমন্ত্রী আছেন। যাঁরা ভোট দেন, তাঁরা শুনুন, সুনীতা চাওলা।’
সুনীতাকে হাতিয়ার করে শুভেন্দুর লক্ষ্য ভবানীপুর?
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের আগে খুব সচেতনভাবেই বিজেপি বিধায়ক গুজরাটি ভাবাবেগে পাল দেওয়ার চেষ্টা করলেন। বিশেষত মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা এলাকায় (ভবানীপুর বিধানসভা) বড় অংশের গুজরাটি মানুষ বসবাস করে থাকেন। ‘গুজরাটি’ সুনীতার ভাবাবেগকে হাতিয়ার করে শুভেন্দু তৃৃণমূলের ভোটব্যাঙ্কে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করলেন বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।