ভালো ফল করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন ছেলে। কথা রেখেছেন। উচ্চ মাধ্যমিকে ৭২ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। কিন্তু সেই নম্বর দেখার জন্য আজ ছেলেই নেই। সেই আক্ষেপই কুরেকুরে খাচ্ছে ইচ্ছাপুরের যুবক শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাবা-মা'কে।
অথচ ছেলে কতই না স্বপ্ন দেখেছিলেন। ভালো রেজাল্ট হলে মোবাইল কিনে দেওয়ার বায়না করেছিলেন। আবদার করেছিলেন, সপরিবারে বিরিয়ানি খেতে যাওয়ার। কিন্তু গত ১০ জুলাইয়ের এক ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নে সেইসব আবদার-বায়না করা ছেলেই মারা গিয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসকদের চূড়ান্ত গাফিলতিতে শুভ্রজিতের মৃত্যু হয়েছে। তা নিয়ে হাইকোর্টেও গিয়েছে পরিবার। সৎকারের অনুমতি মিলেছে। হাইকোর্টের অনুমতি পেয়ে শুভজিতের সৎকারের পরদিন প্রকাশিত হয় উচ্চ মাধ্যমিকের ফল।
শুক্রবার বিকেলে গলায় একরাশ দলা পাকানো কষ্ট নিয়ে ছেলের রেজাল্ট দেখতে বসেছিলেন শুভ্রজিতের বাবা-মা। সেই রেজাল্ট দেখার পর নিজেদের সামলে রাখতে পারেননি আর। কাঁদতে কাঁদতে মা শ্রাবণীদেবীর আক্ষেপ, টপড়াশোনার জন্য ছেলেকে কত মেরেছেন, বকেছেন। ছেলে পড়েছে। পরিশ্রম করেছে। অথচ এত ভালো ফল করেও জানতে পারল না ছেলে।' চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি বাবা বিশ্বজিৎবাবুও। তিনি বলেন, ‘উচ্চ মাধ্যমিক ভালো ফল করার প্রতিজ্ঞা করেছিল ছেলে। আমার ছেলে কথা রেখেছে। আমরা কথা রাখতে পারলাম না।’
আর সেই আক্ষেপের মধ্যেই ছেলের কিছু স্মৃতি, উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট, ছেলের প্রতিশ্রুতির কোলাজ সম্বল করেই বাঁচতে চান চট্টোপাধ্যায় দম্পতি। সঙ্গে এক লড়াইয়ের বার্তা, ‘ছেলের মৃত্যুর জন্য যাঁরা দায়ী, তাঁরা শাস্তি পাবেন।’