আলোর উৎসবের দিন নেমে এল অন্ধকার। দীপাবলির রাতে প্রয়াত হলেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সু্ব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫।
বৃহস্পতিবার রাতে এসএসকেএমের বাইরে ফিরহাদ হাকিম জানান, ধমনীতে স্টেন্ট বসানোর পর ভালো ছিলেন সুব্রত। কিন্তু দীপাবলির রাতে বাথরুম থেকে বেরনোর পথে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। কিছুক্ষণ পরই আবারও ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হয়। কিন্তু পরপর দুটি হৃদরোগের ধকল নিতে পারেনি। রাত ৯ টা ২২ মিনিটে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী। ফিরহাদ বলেন, ‘মমতাদি আসতে আসতে পুরো ভেঙে পড়েছিলেন। মমতাদি বলছিলেন, জীবনে অনেক ঝড়ঝাপটার মুখে পড়েছি। কিন্তু এরকম পরিস্থিতির মুখে কখনও পড়িনি।’
গত ২৫ অক্টোবর এসএসকেএমে ভরতি করা হয়েছিল পঞ্চায়েতমন্ত্রীকে। সেইসময় হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছিল, হৃদপিণ্ডের সমস্যা আছে সুব্রতের। সঙ্গে সিওপিডি, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও আছে। একাধিক পরীক্ষার পর সংক্রমণ ধরা পড়েছে তাঁর বুকেও। শ্বাসকষ্টের কারণে তাঁকে পরে আইসিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। তৈরি হয়েছিল সদস্যের বিশেষ মেডিকেল বোর্ড। তারইমধ্যে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা হয়েছিল মন্ত্রীর। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ধমনীতে দুটি স্টেন্ট বসানো হয়েছিল। তারপর থেকেই শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল তাঁর। বৃহস্পতিবার সকালে কার্ডিও থেকে উডবার্ন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছিল। কিন্তু সন্ধ্যায় পরপর দুটি ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হয়। দ্রুত তাঁকে স্থানান্তর করা হয় আইসিসিইউতে।
প্রিয় সুব্রতদার প্রয়াণে ভেঙে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসএসকেএমের বাইরে তিনি বলেন, ‘জীবনে অনেক দুর্যোগ দেখেছি। কিন্তু সুব্রতদার মৃত্যুটা আমার কাছে ভীষণ-ভীষণ বড় দুর্যোগ। সুব্রতদার মতো মানুষ, এত হাসিখুশি মানুষ, এত কর্মঠ মানুষ, পার্টি অন্ত প্রাণ, বিধানসভা অন্ত প্রাণ - আর হবে কিনা, সন্দেহ আছে। আমি গোয়া থেকে ফিরেই হাসপাতালে আসি। সেদিনও আমার সঙ্গে কথা হল। হাসল। বলল, আমি আবার জেলায় জেলায় যাব। আজ সন্ধ্যায় আমার বাড়ির কালীপুজোয় গিয়েছিলেন এখানকার প্রিন্সিপাল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম। বললেন যে এখন ভালো আছেন, কাল ছেড়ে দেওয়া হবে। তারমধ্যে বিরাট হার্ট অ্যাটাক হল। চিকিৎসকরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পারেননি।'