নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মুক্তি পেয়েছেন অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়। তবে এখনও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় জেলেই রয়েছেন। জামিনের অপেক্ষায় কার্যত দিন গুনছেন তিনি। তবে সেই প্রসঙ্গেই এবার সামনে আসছে সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্য়ায়ের কথা। সারদা কেলেঙ্কারি মামলায় জেলবন্দি তারা। দিন-বছর পার। দেখতে দেখতে প্রায় এক যুগ কেটে গিয়েছে জেলে। কবে মুক্তি, উত্তর নেই কোথাও।
বহু মানুষ সর্বস্ব খুইয়েছিলেন এই সারদা কেলেঙ্কারিতে। ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে গ্রেফতার হয়েছিলেন সুদীপ্ত ও দেবযানী। তারপর থেকে তারা জেলে। সূত্রের খবর, তাদের বিরুদ্ধে যা অভিযোগ তাতে সাজা হতে পারে সর্বোচ্চ সাত বছর। কিন্তু তারপরেও তারা সাজার মেয়াদের বেশি সময় জেলেই কাটিয়ে দিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, কার্যত বিনা বিচারে জেলে আটকে রয়েছেন সুদীপ্ত- দেবযানী। এই মামলায় প্রাপ্য শাস্তির বেশি সাজা ভোগ করে ফেলেছেন তারা। বিচারের আগেই এভাবে সাজা ভোগ করাটা আইনের দিক থেকে ন্যায্য নয়।
এদিকে সম্প্রতি জেল থেকে সরাসরি আদালতে প্রিজনার্স পিটিশন দাখিল করেছিলেন সুদীপ্ত সেন। তারপর আদালতের হস্তক্ষেপে কিছুটা হলেও নড়েচড়ে বসে তদন্তকারী সংস্থাগুলি। ওই পিটিশনে সুদীপ্ত লিখেছিলেন তার হয়ে কোনও আইনজীবী নেই। তারপর আইনজীবী নিয়োগ করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। এরপর তার আইনজীবী নিয়োগ করা হয়। তবে সুদীপ্তর বিরুদ্ধে কার্যত মামলার পাহাড় ছিল। তবে বহু মামলায় তিনি জামিনও পেয়ে গিয়েছেন। ভিন রাজ্যেও সুদীপ্তর বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় ১৭টি সমন বকেয়া রয়েছে।
গত বছর জুন মাসে কিছুক্ষণের জন্য বাড়িতে এসেছিলেন দেবযানী। সেই সময় অসুস্থ ছিলেন শর্বরী মুখোপাধ্যায়। সারদা কাণ্ডে ধৃত দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের মা। ঢাকুরিয়ার বাড়িতে কিছুক্ষণের জন্য মায়ের কাছে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই মতো সাড়া দিয়েছিল আদালত। প্রায় ১ দশক পরে ঢাকুরিয়ার বাড়িতে ফিরেছিলেন দেবযানী। সেটাও মাত্র ৬ ঘণ্টার জন্য। কিন্তু এতদিন পরে মায়ের পাশে বসলেন দেবযানী। সেই পুরানো বাড়ি, ঘর, বিছানা, খাট সবই আছে আগের মতো। তবে আগোছালো। শুধু এই বাড়ির মেয়েই এত বছর ধরে জেলে। মুক্তির অপেক্ষায় দিন কাটছে। সারদা কেলেঙ্কারির মতো ভয়াবহ অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
সেদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কিছু কথা বলেছিলেন তিনি।
সাংবাদিক: মা কেমন আছেন এখন?
দেবযানী: মোটামুটি। ভালো নেই।
কথা বললেন মায়ের সঙ্গে?
দেবযানী: হ্যাঁ
কী কথা হল?
দেবযানী: ওটা তো মায়ের সঙ্গেই কথা। সেটা কি পাবলিক করার কথা।
কী বললেন মাকে? ভালো থাকার জন্য় বললেন?
দেবযানী: এটা ছাড়া আমার আর কী বলার আছে।
এরপর আবার আসবেন? প্রশ্ন করেছিলেন সাংবাদিক।
দেবযানীর মুখ কিছুটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, বলতে পারছি না।
তবে কবে জেলমুক্ত হবেন সুদীপ্ত- দেবযানী সেটা নিয়ে এবার নতুন করে চর্চা চলছে।