বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > কলকাতা > সুজয়কৃষ্ণ কি আগে ‌হকারি করতেন?‌ নানা তথ্যে এখন হিরো কালীঘাটের কাকু

সুজয়কৃষ্ণ কি আগে ‌হকারি করতেন?‌ নানা তথ্যে এখন হিরো কালীঘাটের কাকু

সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির সুজয়কৃষ্ণ।

অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা মেলাতে গিয়ে তদন্তকারীরা দেখেন, কালীঘাটের কাকুর পাঠানো নামের সিংহভাগই স্কুলে চাকরি পেয়েছেন। পরে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়। তাতে একটি আলাদা ফোল্ডারে চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা রয়েছে। আর কে, কত টাকা দিয়েছেন, তারও উল্লেখ রয়েছে। 

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ১১ ঘণ্টা ম্যারাথন জেরার পর মঙ্গলবার রাতে ইডির হাতে গ্রেফতার হলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি এবং লেনদেনের ব্যাপারে স্পষ্ট উত্তর না দেওয়ায় তাঁকে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আজ, বুধবার ইডির বিশেষ আদালতে তাঁকে পেশ করা হচ্ছে। কালীঘাটের কাকুর সঙ্গে আর কার কার যোগাযোগ রয়েছে সেটা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তাপস মণ্ডল প্রথম বলেছিলেন নামটি। এবার অতীত খানিকটা বললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল গ্রেফতার হয়েছেন। গোপাল দলপতির নাম উঠে আসতেই প্রকাশ্যে চলে আসে এই কালীঘাটের কাকুর নাম। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের বাড়ি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিধানসভা এলাকা বেহালা পশ্চিমের ফকিরপাড়ায়। সুতরাং একটা যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। জেরার মুখে বহুবার পার্থের নাম তিনি নিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। তাঁর প্রাসাদোপম বাড়ি দেখে চোখ কপালে উঠে যাবে। সেই বাড়ির গায়েই রয়েছে খোদাই করা নাম ‘রাধারানি’। তাঁর সম্বন্ধে খোঁজ করতে গিয়ে ইডি জানতে পারে, সুজয়বাবুর বেহালার বাড়িতে প্রত্যেকদিন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে এজেন্টরা বস্তা বস্তা টাকা এবং চাকরি প্রার্থীদের নামের তালিকা নিয়ে আসত। তিনি সেই তালিকা পাঠাতেন সংশ্লিষ্ট ব‌্যক্তির কাছে।

এখন সুজয়কৃষ্ণের কাছে সেই নামটিই জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা। তাঁর ‘কালীঘাটের কাকু’ তকমা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‌আমি বেহালা পশ্চিমে থাকি। আমার অফিসও এখানে। আমার সঙ্গে দূর–দূরান্ত পর্যন্ত কালীঘাট জায়গাটির কোনও যোগাযোগ নেই। আমি অবাক হয়েছিলাম।’‌ কিন্তু কুন্তল ঘোষকে যে তিনি চিনতেন সে কথা স্বীকার করেছিলেন। অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা মেলাতে গিয়ে তদন্তকারীরা দেখেন, কালীঘাটের কাকুর পাঠানো নামের সিংহভাগই স্কুলে চাকরি পেয়েছেন। পরে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়। তাতে একটি আলাদা ফোল্ডারে চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা রয়েছে। আর কে, কত টাকা দিয়েছেন, তারও উল্লেখ রয়েছে। সূত্রের খবর, এদিন সেই তালিকা সুজয়ের সামনে তুলে ধরলেও গোটা বিষয়টি অস্বীকার করেন। তখন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

‘কালীঘাটের কাকু’ আসলে কে?‌ এই বিষয়ে রাজ্য বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছিলেন, ‘‌শুনেছি তিনি একসময় হকারি করতেন। যদিও এই তথ্য কতটা সত্য আমি জানি না। কিন্তু, আজ তাঁর বাড়ি দেখে মনে হয় যদি সৎপথে আমি এই ধরনের একটা বাড়ি তৈরি করতে পারতাম তা হলে নিজেকে অনেক সফল মনে হতো।’‌ সূত্রের খবর, সুজয়কৃষ্ণকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় একাধিক অসংগতি ধরা পড়েছিল। গ্রেফতারির আগে নয়াদিল্লির সদর দফতরের সঙ্গে কালীঘাটের কাকুর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকে সবুজ সংকেত মিলতেই গ্রেফতার করা হয় কালীঘাটের কাকুকে।

বন্ধ করুন