নবান্ন অভিযানের মিছিলে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে হাওড়ায় আটক করা হল সুকান্ত মজুমদারকে। বিজেপির এই মিছিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তখন বিজেপি কর্মীদের ঠেকাতে হাওড়াতে চলল জলকামান, কাদানে গ্যাস, এবং লাঠিচার্জ বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। পুলিশ বোমা ছুড়ছে বলে অভিযোগ করলেন খোদ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। লালবাজারে আটক শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চট্টোপাধ্যায়। আর মিছিল নিয়ে হাওড়ায় বাধা পেয়ে দিলীপ ঘোষ ঘোষণা করে দেন, ‘নবান্ন অভিযান শেষ’। তাহলে কী দিলীপ–সুকান্ত মতান্তর প্রকাশ্যে চলে এল? উঠছে প্রশ্ন।
ঠিক কী বলেছেন সুকান্ত? এদিন মিছিলের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তখন সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘পুলিশ বোমা ছুড়ছে, বোমার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। আমার ঘাড়ে লেগেছে, ঘাড়ে প্রচন্ড ব্যথা। আইন মেনেই আমরা আন্দোলন করছিলাম, কিন্তু পুলিশই বাধা দিয়েছে। আপনারা সরে যান। আমার কর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবেই মিছিল এগিয়ে নিয়ে যাবেন। যেভাবে জলকামান মারা হচ্ছে, ইলেক্টিক তারে শর্ট–সার্কিট পর্যন্ত হয়। এভাবে যে কারও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারত। আমরা বাধ্য হয়ে ওখান থেকে চলে আসি। এভাবে আন্দোলন দমানো যায় না। ইলেক্টিক তারে স্পার্কিং হচ্ছিল।’
ঠিক কী ঘটেছিল হাওড়ায়? হাওড়া ব্রিজে ওঠার আগে বঙ্গবাসী মোড়। মিছিল ব্রিজে ওঠার আগেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ বিজেপি কর্মীদের পথ আটকাতেই ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। ব্যারিকেড করে দেয় পুলিশ। ব্যারিকেড ভাঙে বিজেপি কর্মীরা। এই পরিস্থিতি দেখে হাওড়া বঙ্গবাসী মোড়ে জলকামান ছোড়া শুরু করে পুলিশ। তাতে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন বিজেপি কর্মীরা। তখন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। রণক্ষেত্রের চেহারা নিতেই র্যাফ লাঠি উঁচিয়ে তাড়া শুরু করে। এই অবস্থায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষ ঘোষণা করেন ‘নবান্ন অভিযান শেষ’।
তারপর সেখানে কী ঘটল? এই খবর গিয়ে পৌঁছয় সুকান্ত মজুমদারের কানে। তখন তিনি বেশ বিরক্ত হন। আর সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আলাদা আলাদা মিছিল। আলাদা আলাদা আন্দোলন। দিলীপ ঘোষ নিজের মিছিল শেষ ঘোষণা করতে পারেন। কিন্তু আমার মিছিল শেষ নয়। নবান্ন অভিযান কর্মসূচি চলছে। পুলিশ যতক্ষণ না আমায় গ্রেফতার করে ততক্ষণ রাস্তাতেই বসে থাকব।’ পরে অবশ্য গ্রেফতার করে শিবপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয় সুকান্তকে। ফলে দুই নেতার মধ্যেকার দ্বন্দ্বে নবান্ন অভিযান চূড়ান্ত ফ্লপ শো বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।