বাংলাদেশে এখন অশান্তির বাতাবরণ। আর তার লাগোয়া এলাকা সুন্দরবন। যা এপার বাংলায়। এখানেই ‘ট্রানজিট ক্যাম্প’ তৈরি করেছে লস্কর–ই–তৈবা। তার কারণ এখানে জলপথে উপকূলের পুলিশ এবং বিএসএফের চোখে ধোঁকা দেওয়া। এই সুন্দরবন এলাকা ব্যবহার করে পৌঁছে যাওয়া যাবে রাজশাহী, খুলনা–সহ বাংলাদেশের জেলাগুলিতে। আর সেটাও অনেক কম সময়ে। ক্যানিং থেকে সদ্য গ্রেফতার করা হয়েছে কাশ্মীরের জঙ্গি জাভেদ মুন্সিকে। আর তাকে ম্যারাথন জেরা করে এই তথ্য পেল জম্মু–কাশ্মীর পুলিশ। আর তারপরই সময় নষ্ট না করে ভূস্বর্গের পুলিশ তথ্য দিল এই রাজ্যের প্রশাসনকে বলে সূত্রের খবর।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, কাশ্মীরে এখন কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনি রাখায় বাংলাদেশ থেকে লস্কর–ই–তৈবার পাক হ্যান্ডলাররা হাওলার মাধ্যমে এপারের স্লিপার সেলকে টাকা পাঠাচ্ছে। এই টাকা যে কারণে পাঠানো হচ্ছে সেই কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা সেটা তদারকি করতেই ক্যানিংয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে গা–ঢাকা দিয়েছিল জঙ্গি জাভেদ। আর তার সঙ্গে নতুন করে বেশ কয়েকটি এলাকায় ‘ট্রানজিট ক্যাম্প’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল তার। দক্ষিণ ২৪ পরগনাকে পাখির চোখ করা হলেও মূল পথ তৈরি হচ্ছে সুন্দরবনে। যেখান থেকে সহজেই বাংলাদেশে যাতায়াত সম্ভব। ‘জঙ্গি’ জাভেদকে নিয়ে কাশ্মীর গিয়েছে শহিদগঞ্জ থানার পুলিশ।
আরও পড়ুন: ‘ক্ষমা চান দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’, আম্বেদকর ইস্যুতে রাজপথে দাঁড়িয়ে সুর চড়ালেন কুণাল
জঙ্গি জাভেদ জেরায় তদন্তকারীদের জানিয়েছে, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর লস্কর–ই–তৈবার শীর্ষ জঙ্গিরা এবং পাক হ্যান্ডলাররা বাংলাদেশের নানা প্রান্তে বিচরণ করছে। পাকিস্তান–কাশ্মীর সীমান্ত দিয়ে হাওলার কারবার বন্ধ হয়েছে। এই রুটে অস্ত্রও এখন নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। রাজস্থান এবং পঞ্জাবের পাক সীমান্তেও একই অবস্থা। তাই তারা বেছে নিয়েছে বাংলাদেশকে। যাতে সহজেই সীমান্ত পারাপার করা যায়। সুন্দরবন সংলগ্ন হিঙ্গলগঞ্জ, ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা, বসিরহাট এবং হাসনাবাদ এলাকাকে বেছে নিয়েছে লস্কর–ই–তৈবার জঙ্গিরা।
দফায় দফায় জেরায় কাশ্মীর পুলিশকে জঙ্গি জাভেদ জানিয়েছে, বর্ডারের ওপার থেকে আসছে হাওলার মাধ্যমে টাকা। এখানেরই কয়েকজন যুবকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অর্থের লোভ দেখিয়ে তাদের নামে অ্যাকাউন্ট খুলেছে সে নিজেই। ১০টি অ্যাকাউন্টের অস্তিত্ব এখনও আছে। সুন্দরবন লাগোয়া জলপথ পার করে আগেও বাংলাদেশে গিয়েছে সে। দেখা করেছে শীর্ষ লস্কর–ই–তৈবার কমান্ডারদের সঙ্গে। এমনকী তার শ্যালক তথা ক্যানিংয়ের শাল ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্টও ব্যবহার করেছে সে।