কুন্তল ঘোষের চিঠির ভিত্তিতে ইডির দায়ের করা মামলা থেকে অব্যহতি চেয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদনের দ্রুত শুনানির আবেদন নাকচ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শনিবার অভিষেকের দায়ের করা আবেদনের শুনানি হতে পারে শুক্রবার। সোমবার মামলাটির দ্রুত শুনানির আবেদন জানিয়েছেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক।
অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁর ওপর কেন্দ্রীয় এজেন্সি চাপ দিচ্ছে, গত ৩০ মার্চ এই অভিযোগ করেন নিয়োগ দুর্নীতিতে জেলবন্দি তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ। ঠিক তার আগেরদিন শহিদ মিনার ময়দানে এক দলীয় সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমার নাম নেওয়ার জন্য মদন মিত্র, কুণাল ঘোষকে চাপ দিয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। চাপের কাছে নতি স্বীকার না করায় তাদের দিনের পর দিন জেলবন্দি থাকতে হয়েছে। অভিষেকের মন্তব্যের পরই কুন্তলের অভিযোগে প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি দুয়ের মধ্যে কোনও সম্পর্ক রয়েছে?
তবে মৌখিক অভিযোগ করেই থেমে থাকেননি কুন্তল। একই অভিযোগ জানিয়ে CBI ও PMLA আদালতে বিচারককে চিঠি দেন তিনি। এর পর প্রেসিডেন্সি জেল থেকে প্রিজনার্স পিটিশনের মাধ্যমে একই অভিযোগ জানান হেস্টিংস থানায়। পুলিশে অভিযোগ দায়েরের পর বিষয়টি আদালতে উত্থাপন করে ইডি। এর পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কুন্তল ও অভিষেককে জেরা করতে দেন সিবিআইকে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান অভিষেক। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের ওপর কোনও স্থগিতাদেশ দিতে অস্বীকার করে সর্বোচ্চ আদালত। তবে বিতর্ক এড়াতে মামলাটির এজলাস পরিবর্তনের নির্দেশ দেয় তারা।
এর পর মামলাটি যায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। গত বৃহস্পতিবার অভিষেকের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি সিনহা নির্দেশ দেন, অভিষেককে জেরা করতে পারবে সিবিআই। সঙ্গে আদালতের সময় নষ্ট ও তদন্তের গতি কমানোর দায়ে কুন্তল ও অভিষেককে ২৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করেন তিনি। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন অভিষেক। কিন্তু আবেদনের দ্রুত শুনানি করতে অস্বীকার করে আদালত।
আদালতের নির্দেশ আসতেই শুক্রবারই অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে CBI. শনিবার সকাল১১টায় তাঁকে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিতে বলা হয় তাঁকে। ওদিকে শনিবার সকালে অভিষেক সিবিআইকে চিঠি দিয়ে জানান, হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
শনিবার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে দ্রুত শুনানির আর্জি জানান অভিষেক। কিন্তু সোমবার সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ। শুক্রবার মামলাটির শুনানি হবে বলে জানিয়েছে আদালত। অর্থাৎ গোটা ৪টে দিন কোনও রক্ষাকবচ ছাড়াই কাটাতে হবে তৃণমূলের ‘সেকেন্ড ইন কম্যান্ড’-কে।