‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-র নামে জঙ্গি কার্যকলাপ চালাত। ফোনে রেখে দিয়েছিল আইসিসের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ভিডিয়ো। সেইসঙ্গে কমপক্ষে দু'বছর ধরে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে যাচ্ছিল। হাওড়ায় আইসিস জঙ্গি সন্দেহে ধৃত দুই যুবককে জেরা করে এমনই সব তথ্য উঠে এসেছে বলে সূত্রের খবর।
কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) সূত্রে খবর, শনিবার গ্রেফতারির পর রাতভর দুই যুবককে জেরা করা হয়েছে। তাতে একাধিক তথ্য হাতে উঠে এসেছে। পুলিশ জানতে পেরেছে যে বছরদুয়েক ধরে মহম্মদ সাদ্দাম ওরফে সাদ্দাম মল্লিকের (আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এম.টেক কোর্সে ভরতি হয়েছিল) সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া বা আইসিসের যোগ ছিল। টেলিগ্রামের মতো অ্যাপের মাধ্যমে সাংকেতিক ভাষায় কথা চালাচালি হত।
শুধু তাই নয়, কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল সাদ্দামের। পাকিস্তানের যোগও উঠেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর মিলেছে। ওই সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার বিষয়ে তথ্যসন্ধান করছিল সাদ্দাম। সেই সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিষয় জানছিল। তার জেরেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি বড়সড় কোনও পরিকল্পনা করছিল সাদ্দামরা? সেই প্রশ্নের উত্তর সন্ধানে গোয়েন্দারা সাদ্দাম ও সঙ্গীদের জেরা করে জানতে চাইছেন যে কোনও হামলার ছক ছিল কিনা। কেন বিস্ফোরক বা অস্ত্র জোগাড় করা হচ্ছিল, তাও জানতে চাইছেন গোয়েন্দারা।
শুক্রবার বিকেলে দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে ধাওয়া করে সাদ্দাম ও সৈয়দ আহমেদকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাদের ফোন, ল্যাপটপ, পেন ড্রাইভ, হার্ডডিস্ক, সিপিইউ, নথিপত্র, নোটবুক, ডায়েরি এবং ডেবিট কার্ড। পরে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হলে আগামী ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, বেসরকারি সংস্থায় কাজ করত সাদ্দাম। তবে চাকরি চলে যাওয়ার পর বাড়িতে জানিয়েছিল যে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ (WFH) চলছে। দু'বছর ধরে সেভাবেই জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ রেখে যাচ্ছিল। বিদেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্টও তৈরি করেছিল সাদ্দাম। তার এক দাদা সৌদি আরবে থাকলেও কোথায় যাওয়ার জন্য সাদ্দাম পাসপোর্ট তৈরি করেছিল, তা স্পষ্ট নয়। ধৃতদের জেরা করে এমনই সব প্রশ্নের সন্ধান চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা।