আরজি কর মামলার রায়দানের যে দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়েছে, সেটা মেয়েকে ‘বিচার’ পাইয়ে দেওয়ার প্রথম ধাপ। মেয়ের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় হাসপাতালের কেউ যুক্ত আছেন। সকলেই যখন সাজা পাবেন, তখন তাঁর মেয়ে প্রকৃত ‘বিচার’ পাবেন। এমনই মন্তব্য করলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের মা। আর সেই ‘হাসপাতালের কেউ’ হিসেবে তাঁদের সন্দেহের তালিকায় চারজন জুনিয়র ডাক্তার আছেন বলেও জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘ওইদিন রাতের বেলা (৮ অগস্ট রাতে) যারা আমার মেয়ের সঙ্গে ছিল, তাদের আমরা প্রচণ্ড-প্রচণ্ডভাবে সাসপেক্ট (সন্দেহ) করছি। ডিএনএ রিপোর্ট তো পাওয়া গিয়েছে। তথ্যপ্রমাণ দেখেছেন। কোনও মহিলারও উপস্থিতি আছে।’
আর তাঁরা সেই মন্তব্য করেছেন আরজি কর মামলার রায়দানের দিনক্ষণ সামনে আসার ঠিক পরেই। বৃহস্পতিবার শিয়ালদা আদালত জানিয়েছে যে আগামী ১৮ জানুয়ারি আরজি কর কাণ্ডের রায়দান করা হবে। আপাতত ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় একমাত্র এবং মূল অভিযুক্ত হিসেবে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে চিহ্নিত করেছে সিবিআই। সঞ্জয়ের মৃত্যুদণ্ডের সাজাও চাওয়া হয়েছে।
'বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়নি, সবে শুরু হল'
যদিও নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হয়নি। সবে শুরু হল। প্রথম যে অভিযুক্ত ছিল, তার বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করা হবে ১৮ জানুয়ারি। আদালতের কাছে সিবিআই জানিয়েছে, পরবর্তীতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দাখিল করা হবে। সামনে আনা হবে আরও অপরাধীদের।
‘সব অপরাধীরা শাস্তি পেলে মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে’
মায়ের কথায়, ‘আমরা মনে করি যে সঞ্জয় দোষী। কিন্তু একা ওর পক্ষে আমার মেয়েকে মেরে ফেলা সম্ভব নয়। ওই হাসপাতালের কেউ জড়িত আছে।’ তিনি বলেন, ‘সব অপরাধীরা যখন শাস্তি পাবে, তখন আমার মেয়ে ও আমার আত্মা শান্তি পাবে।’ সেইসঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, কলকাতা পুলিশ পাঁচদিনে যা করেছিল, সিবিআই সেটা পাঁচ মাসে করেছে। একমাত্র সঞ্জয়কে সামনে আনতে পেরেছে।
আরও পড়ুন: Junior Doctors: 'তাহলে সঞ্জয়কে আড়াল করতেই প্রমাণ লোপাট হচ্ছিল?' ফের রাত জাগছেন জুনিয়ররা
‘আমরা সিবিআই চাইনি’, দাবি নির্যাতিতার পরিবারের
আর সেজন্য যে তাঁরা সিবিআইয়ের উপরে একেবারেই প্রসন্ন হন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা-মা। বাবা বলেছেন, ‘এখন আমরা সিবিআইয়ের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলছি না। (আরও তদন্ত নিয়ে) আমরা কোর্টের সামনে প্রশ্নগুলি রেখেছি।’ আর মা তো স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছেন, ‘আমরা সিবিআই চাইনি। হাইকোর্টে ভালো তদন্তকারী এজেন্সি চেয়েছিলাম।’
তবে তাঁরা কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের উপরে যাবতীয় ভরসা রাখছেন বলে জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁদের বক্তব্য, আদালতের উপরে আস্থা আছে। যা বলার, তাঁরা আদালতকে জানিয়েছেন।