এক মাসের জন্য শুভেন্দু অধিকারীকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হল। সেইসঙ্গে ৩০ দিনের সাসপেনশনের মুখে পড়েছেন আরও তিন বিজেপি বিধায়ক - অগ্নিমিত্রা পাল, বঙ্কিম ঘোষ এবং বিশ্বনাথ কারক। সূত্রের খবর, সরস্বতী পুজোর সময় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছিল, তা নিয়ে বিজেপি মুলতুবি প্রস্তাব আনতে চেয়েছিল। কিন্তু সেটি খারিজ হয়ে যাওয়ার পরই বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে লক্ষ্য করে শুভেন্দু কাগজ ছোড়েন বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই শুভেন্দু-সহ চার বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে। যদিও পরবর্তীতে বিধানসভার বাইরে শুভেন্দু দাবি করেছেন, কাগজ ছোড়া হয়নি। স্রেফ কার্যবিবরণীর কাগজ ছেড়া হয়েছে।
সরস্বতী পুজো নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব এনেছিল বিজেপি
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা দাবি করেছেন, সরস্বতী পুজো করার জন্য যে কোর্টে যেতে হয়েছে, পুলিশ নামিয়ে যে সরস্বতী পুজো করতে হয়েছে, সেটার জন্য আজ মুলতুবি প্রস্তাব আনা হয়েছিল। কিন্তু তা খারিজ দেওয়া হয়। সেজন্যই ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তারপরই তাঁদের সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা।
‘দুর্গা, কালী ঠাকুর ভাঙা সরকার’ তৃণমূল
সেইসঙ্গে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে ‘হিন্দু-বিরোধী’, ‘হিন্দু ধর্মের রীতিনীতি বিরোধী’-র তকমা দিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি দাবি করেছেন, তৃণমূল যেভাবে সরকার চালাচ্ছে, তাতে মুসলিম লিগকেও হার মানাবে। ‘মুসলিম লিগ ২’ সরকার চলছে। তৃণমূল সরকার হল দুর্গা ঠাকুর ভাঙা সরকার, কালী ঠাকুর ভাঙা সরকার, লক্ষ্মী ঠাকুর ভাঙা সরকার। আর তাই হিন্দুদের হয়ে কথা বলার জন্য তাঁদের সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন শুভেন্দু।
'কাগজ ছিঁড়ে স্পিকারের দিকে ছোড়া হয়'
স্পিকার অবশ্য স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে শৃঙ্খলাভঙ্গ করেন শুভেন্দু-সহ বিজেপির কয়েকজন সদস্য। তাই তাঁদের সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, আজ বিরোধী নেতা-সহ কয়েকজন সদস্য যে আচরণ করেছেন, তা কখনওই কাম্য নয়। যে সরকারি কাগজ দেওয়া হয়, সেগুলিকে ছিঁড়ে স্পিকারের চেয়ারের দিকে ছুড়ে-ছুড়ে মারা হয়।
বিধানসভার স্পিকার আরও জানান, এরকম আচরণ অত্যন্ত নিন্দনীয়। সেটার প্রেক্ষিতে বিধানসভার মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ একটি প্রস্তাব আনেন। ৩০ দিনের সাসপেনশনের প্রস্তাবে সম্মতি জানান সদস্যরা। আর তার ফলে শুভেন্দু-সহ চার বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়েছে। যে শুভেন্দুকে ২০২১ সাল থেকে বিধানসভায় মোট চারবার সাসপেনশনের মুখে পড়তে হল।