আবার নওশাদের মুক্তির দাবিতে সরব হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর আগের অবস্থান থেকে সরে এসে এবার মন্তব্য করলেন খোদ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সুতরাং এই পরিস্থিতিতে নওশাদকে নিয়ে ফের রাজ্য–রাজনীতি তপ্ত হয়ে উঠল। একদিকে বিরোধী দলনেতা নওশাদের জন্য রাস্তায় নামতে বলছেন। অন্যদিকে বিধানসভার অধ্যক্ষ আইন আইনের পথেই চলবে বলছেন। তাই আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী।
ঠিক কী বলেছেন শুভেন্দু? কিছুদিন আগে বিরোধী দলনেতা বলেছিলেন, ‘নওশাদ ভাইয়ের দম আছে। তাই তিনি আত্মসমর্পণ করেননি।’ আর এবার তিনি বলেন, ‘নওশাদের জন্য রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হবে।’ যেভাবে সিএএ–এনআরসি’র প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নেমে আন্দোলন হয়েছিল এবার সেভাবেই আন্দোলন করার কথা বলেন শুভেন্দু অধিকারী। সাগরদিঘি উপনির্বাচনের জন্য প্রচারে যান বিজেপি বিধায়ক। রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে তিনি নওশাদ সিদ্দিকীর পক্ষেই বার্তা দিয়েছেন। শুভেন্দু বলেন, ‘নওশাদ ভাইয়ের জন্য আন্দোলনটা করতে হবে। আপনারা তো রাস্তায় নেমে সিএএ–এনআরসি’র বিরুদ্ধে মিছিল করেছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিতিয়েছিলেন। রাস্তায় নেমে নওশাদের মুক্তি দাবি করুন। আমাদের শুভেচ্ছা আছে। আমরা সরাসরি যেতে পারব না, কিন্তু আমাদের শুভেচ্ছা আছে।’
বিধানসভার অধ্যক্ষ কী বলছেন? কয়েকদিন আগে আগে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি, এতদিন জেলে নওশাদকে রাখার কোনও মানে হয় না।’ এবার বিধানসভার অধ্যক্ষ বলেন, ‘অতজন পুলিশ অফিসারকে মারা হল প্রকাশ্যে। একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তির নেতৃত্বে এই ধরনের ঘটনা ঘটল। অত্যন্ত নিন্দনীয় অপরাধ করেছেন উনি। আইন আইনের পথে চলবে। বিচারপতিরা রয়েছেন। তাঁরা বিচার করে দেখবেন। আমার বক্তব্যকে অনেক সংবাদপত্রে অন্যভাবে পরিবেশন করা হয়েছে। কিন্তু আমি বলব, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। তিনি বিধায়ক হতে পারেন বা যে কেউ হতে পারেন। বিধায়ক বলে কেউ যে বিশেষ সুবিধা পাবেন সেটা ভাবার কিছু নেই। বিচারপতিরা এটা বিচার করে দেখবেন।’
তারপর ঠিক কী হল? বিধানসভার অধ্যক্ষের অবস্থান বদল নিয়ে এবার সুর চড়িয়েছেন বিরোধী দলনেতা। নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘বিধানসভার অধ্যক্ষ হিসেবে বলেছেন না তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা হিসেবে বলেছেন সেটা আগে ভাবতে হবে। আর তাঁর দয়ার দানে নওশাদ ভাইরা নেই। তাঁরা উচ্চ আদালতে গিয়েছেন। আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্তি পাবেন তিনি।’ সুতরাং সরাসরি অধ্যক্ষের সঙ্গে বিরোধী দলনেতার সংঘাত প্রকাশ্যে চলে এল।