রাজ্য–রাজনীতিতে বেকায়দায় পড়লেই বিজেপি আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে। এটাই বেশি দেখা যাচ্ছে মাঠে নেমে লড়াইয়ের পরিবর্তে। এমন বিষয় নিয়ে বিজেপিকে কম খোঁচা দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। তারপরও এবার কলকাতা হাইকোর্টের দরজায় কড়া নাড়লেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন শুভেন্দু অধিকারী।
ঠিক কী জন্য আদালতের পথে শুভেন্দু? ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর টুইটারে একটি পোস্ট করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘আজ রাতে তাজ বেঙ্গলে গ্র্যান্ড সেলিব্রেশন হচ্ছে। ছেলের জন্মদিনের পার্টিতে কড়া নিরাপত্তা দিয়ে। ৫০০–র বেশি পুলিশ কর্মী, বম্ব স্কোয়াড, ডগ স্কোয়াড রয়েছে সেখানে। ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টর, হাতে ধরা মেটাল ডিটেক্টর সবই আছে।’ কার ছেলের জন্মদিন সেটা অবশ্য উল্লেখ করেননি শুভেন্দু। তবে এক শিশুর সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্যে শিশুর সুরক্ষার অধিকার খর্ব হয় বলেই রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনে অভিযোগ দায়ের হয়। তার প্রেক্ষিতে শুভেন্দু অধিকারীকে নোটিশও পাঠানো হয়। সেই নোটিশ খারিজ এবং তার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করলেন শুভেন্দু অধিকারী।
কবে এই মামলার শুনানি? কলকাতা হাইকোর্টে সূত্রে খবর, আগামী বুধবার বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের একক বেঞ্চে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা আছে। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন যে নোটিশ পাঠিয়েছিল তাতে বলা হয় ১৩ নভেম্বর শুভেন্দুর করা টুইটের প্রেক্ষিতে ১৬ নভেম্বর শিল্পা দাস নামে এক মহিলা কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছেন। শিশু সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন। এমনকী শুভেন্দুর মন্তব্য শিশুটির নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলেও কমিশনের নোটিশ উল্লেখ করা হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে শুভেন্দু অধিকারীকে জবাবও দিতে বলা হয়েছিল। দেশের জুভেনাইল আইন অনুযায়ী শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে চায় কমিশন। বিপাকে পড়ে চিঠি দিয়েছিলেন শুভেন্দুও। কিন্তু তাতে লাভ না হওয়ায় এখন আদালতের দ্বারস্থ হলেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? শুভেন্দু অধিকারীর এই টুইট নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে তুমুল আলোড়ন পড়ে যায়। তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের নেতারা তারপরই ‘গেট ওয়েল সুন’ কর্মসূচিও নেন। তাঁর বাড়িতে গোলাপ এবং কার্ড পাঠানো হয়। হোয়াটসঅ্যাপে ভোর থেকে গেট ওয়েল সুন মেসেজ ঢুকতে থাকে। আর তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ঘোষণা করেছিলেন, ‘শুভেন্দু মানসিকভাবে সুস্থ নেই। তাঁর আরোগ্য কামনা করে চিঠি পাঠানো হবে। সেই কর্মসূচির নাম হবে ‘গেট ওয়েল সুন’।’ সেটা নিয়েও আদালত গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। এবার শিশু সুরক্ষা কমিশনের নোটিশ নিয়ে মামলার দিকে এগোলেন তিনি।