গতকাল নবান্নে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে অনিকেত মাহাতো, দেবাশিস হালদাররা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখে চোখ রেখেই নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। পরে রাতের দিকে আরজি করের নির্যাতিতা চিকিৎসকের মা-বাবার অনুরোধে অনশন প্রত্যাহার করেন তাঁরা। যদিও স্পষ্ট ভাবে তাঁরা জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তাঁরা কোনও ভাবেই সন্তুষ্ট নন। এদিকে জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন প্রত্যাহার প্রসঙ্গে আজ শুভেন্দু অধিকারীকে প্রশ্ন করা হলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। তবে জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন প্রত্যাহারের বিষয়টি যে তিনি খুব একটা 'ভালো চোখে' দেখেননি, তা তাঁর মনোভাবে স্পষ্ট ছিল। (আরও পড়ুন: সরকারি কর্মী নিয়োগে বৈষম্য কেন? দীর্ঘ কয়েক দশকের নিয়ম খারিজ সুপ্রিম কোর্টে)
আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে দুর্যোগের ঘন কালো মেঘ, জেলায় জেলায় জারি লাল সতর্কতা, কবে কোথায় বৃষ্টি?
বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে বলেন, 'তাঁরা কী দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন, এবং কী কারণে অনশন আর আন্দোলন তুললেন, তাঁরাই বলতে পারবেন'। প্রসঙ্গত, গতকালকের নবান্নের বৈঠক থেকে তেমন কোনও ইতিবাচক ইঙ্গিত পাননি জুনিয়র ডাক্তাররা। কিন্তু আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং মেডিক্যাল কলেজের তরুণী চিকিৎসকের বাবা ও মায়ের কথায় আমরণ অনশন তুলে নেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সেইসঙ্গে মঙ্গলবার যে সর্বাত্মক স্বাস্থ্য ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল, সেটাও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তবে নিজেদের দাবিতে অনড় থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে দাবি করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এই আবহে আগামী শনিবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে গণ কনভেনশনের ডাক দিয়েছেন। (আরও পড়ুন: 'মিলেছে প্রমাণ', আরজি কর কাণ্ডে এবার সন্দীপের বিরুদ্ধে পেশ হবে চার্জশিট)
আরও পড়ুন: ছাত্রীর স্টেটাস দেখে ধৃতকে ফোন 'উদ্বিগ্ন বান্ধবীর', কথা ৪০ মিনিট ধরে, ততক্ষণে…
আরও পড়ুন: জয়নগরকাণ্ডে 'মোড় ঘোরালেন' মমতা? সরকারে ভরসা না রাখা বাবা-মা গেলেন নবান্নে
জুনিয়র ডাক্তারা অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেও আক্রমণাত্মক ছিলেন। আন্দোলনকারীরা বলেন, 'অভীক দে, বীরূপাক্ষ বিশ্বাসদের জন্যই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ঘটেছে। থ্রেট কালচার নিয়ে বৈঠক বলতে গেলে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী রীতিমতো ধমকি দিয়ে চুপ করিয়ে দিয়েছেন। বৈঠকে আমরা যদি কোনও কিছু ছিনিয়ে আনতে পারি, সেটা হল রাজ্য টাস্ক ফোর্স। কেন্দ্রীয়ভাবে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে। আমাদের রীতিমতো থ্রেট দেওয়া হয়। লাইভস্ট্রিমিংয়ে আপনারা দেখেছেন। পরীক্ষার খাতা খতিয়ে দেখার বলে থ্রেট দেওয়া হয়।'
আরও পড়ুন: কালীপুজোর আগে বড় উপহার, দুর্গাপুজোর আমেজ কাটতেই জারি হল ডিএ বৃদ্ধির অর্ডার
জুনিয়র ডাক্তাররা আরও বলেন, 'প্রশাসনের শরীরীভাষা একেবারেই ইতিবাচক লাগেনি। আমাদের 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' ব্যাচ পরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমাদের প্রিন্সিপালদের কার্যত চুপ করিয়ে দেওয়া হয়। কেন রাজ্যকে না জানিয়ে থ্রেট কালচারের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করা হয়।' এরপর অনশন প্রত্যাহার নিয়ে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা বলেন, 'আমাদের মঞ্চে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং মেডিক্যাল কলেজের তরুণী চিকিৎসকের বাবা ও মা এসেছেন। কাকু-কাকিমা এসেছেন। তাঁরা আমাদের আমরণ অনশন তুলে নিতে বলেছেন। সাধারণ মানুষও বলেছেন যেন অনশন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।'