২০১৯ সালে সবাইকে অবাক করে দিয়ে বাংলা থেকে ১৮টি লোকসভা আসনে জিতেছিল বিজেপি। এরপর ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে '২০০ পার' স্লোগান দিয়ে ময়দানে নেমেছিল গেরুয়া শিবির। তৃণমূল ভাঙিয়ে তাবড় নেতাদের নিজেদের দিকে টেনেছিল পদ্ম শিবির। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁকেই বিজেপি তুরুপের তাস মনে করেছিল। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে ৩ আসন পাওয়া বিজেপি ২০২১ সালে ৭৭-এ উঠে আসে। তবে ক্ষমতা দখলের থেকে বহু দূরেই থাকে তারা। তবে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি ফের বাংলায় 'ম্যাজিক' দেখাবে বলে আশা করেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। মোদী নিজে এসে দাবি করে গিয়েছিলেন যে বাংলা থেকে এবার বিজেপির ফল সবচেয়ে ভালো হবে। এমনকী বঙ্গ বিজেপির নেতারা পর্যন্ত দাবি করেছিলেন, তৃণমূলের থেকে একটি হলেও বেশি আসন এবার বিজেপি পাবে বাংলা থেকে। তবে ২০১৯ সালের ১৮ আসন থেকে বিজেপি ২৪-এ গিয়ে ঠেকেছে ১২-তে। এই ফলের দায় কার? এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এবার বিস্ফোরক দাবি করলেন শুভেন্দু অধিকারী।
ভোটের ফলের পর থেকেই আদি-নব্য সংঘাত নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বঙ্গ বিজেপিতে। দিলীপ ঘোষ একাধিক মন্তব্য করে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে চাপে ফেলেছেন। তাঁকে এবং দেবশ্রী চৌধুরীর আসন বদল নিয়ে সরাসরি নেতৃত্বকে তোপ দেগেছেন দিলীপ। এই আবহে এবার শুভেন্দু পালটা তোপ দেগে বললেন, 'ফলাফল ভালো হলে নিজেদের ক্রেডিট দেন। খারাপ হলে আমার ঘাড়ে চাপান। আমি কখনই দলের অভ্যন্তরের বিষয় বাইরে বলি না।' বিশ্লেষকদের মতে দিলীপ ঘোষ বা দলে তাঁর বিরুদ্ধে সুর চড়ানো নেতাদের উদ্দেশেই এই কথা বলেছেন শুভেন্দু।
শুভেন্দু বলেন, 'সংগঠনের বিষয় নিয়ে আমি কোনও প্রতিনিধিত্ব করি না। আমার কাজ প্রচার করা। সাংগঠনিক ব্যাপারে আমি হস্তক্ষেপ করি না। ভবিষ্যতে করার ইচ্ছেও নেই।' এদিকে দিলীপের নাম না নিয়ে শুভেন্দু বলেন, 'দলের ভিতরের কোনও কথা প্রকাশ্যে আমি বলি না। আমি খুব শঙ্খলাপরায়ণ। তাতে সবাই আমায় পুরস্কার দেয় না। কেউ কেউ তিরস্কারও দিতে পারে। অনেকে অনেক কিছু পোস্টও করতে পারে। তীর্যক মন্তব্য করতে পারে।' উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটে মেদিনীপুর ও বর্ধমান-দুর্গাপুর আসন দু'টি হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির। মেদিনীপুর থেকে জয়ী প্রার্থী দিলীপকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে এবার বর্ধমান-দুর্গাপুরে প্রার্থী করা হয়েছিল। এই রদবদলে শুভেন্দুর হাত দেখছেন অনেকেই। এরপর হেরে গিয়ে দিলীপ ঘোষও নাম না করে প্রকাশ্যে শুভেন্দুকে নিশানা করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় 'ওল্ড ইজ গোল্ড' পোস্ট করেছেন। এবার এই ইস্যুতে পালটা বিস্ফোরণ ঘটালেন শুভেন্দু। তবে চাপের মুখে ফলাফলের দায় নিজের কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলতে মরিয়া শুভেন্দু। এই নিয়ে তিনি বলেন, 'প্রার্থী নির্বাচন, প্রচার কৌশল সবটাই সংগঠন তৈরি করে। এসব বিষয়ে জেলা সভাপতিরা বলতে পারবেন।'