রাজ্যের বিরোধী দলনেতার মুখে আবার ‘মহাজোটের’ ডাক শোনা গেল। যেখানে কদিন আগে এই একই কাজের জন্য ভর্ৎসনা শুনতে হয়েছিল জেপি নড্ডার কাছ থেকে বলে সূত্রের খবর। তারপরও প্রবীণ বাম নেতা বিমান বসুর প্রশংসা শোনা গেল শুভেন্দু অধিকারীর মুখে। বিমান বসুর সততা থেকে শুরু করে তাঁর জীবনচর্চা নিয়ে ঢালাও প্রশংসা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। ওঁর মতো লোক এখন রাজনীতিতে নেই বলেও পঞ্চমুখ হলেন শুভেন্দু। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসে থাকতে তাঁর মুখে সমালোচনার সুর শোনা যেত।
ঠিক কী বলেছেন শুভেন্দু? তৃণমূল কংগ্রেসকে হঠাতে মানুষের মহাজোটের ডাক দেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কথায়, ‘কোন দল কী করবে জানি না, মানুষ এই সরকারকে বিসর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে। আমার সঙ্গে তো পলিটিক্যাল ডিফারেন্স আছে। কিন্তু বিমানবাবু এখনও নিজের হাতে কাপড় কাচেন, পার্টি অফিসে থাকেন। এসব পলিটিক্স হারিয়ে গিয়েছে।’ যদি একদিকে এই বিষয়ে শুভেন্দুকে তুলোধনা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। আর শুভেন্দুর ডাকে সাড়া দিলেন না বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু।
ঠিক কী বলেছেন কুণাল ঘোষ? তিনি শুভেন্দুর বক্তব্যকে মান্যতা দেননি। এমনকী এই নন্দীগ্রামের বিধায়কের কাছ থেকে বিমান বসুকে চিনতে চাননি। তাই তিনি বলেন, ‘শুভেন্দুর মুখ থেকে আমি বিমান বসুকে চিনতে চাই না। বিমান বসু বর্ষীয়ান, শ্রদ্ধেয় নেতা। সাংবাদিকতার সৌজন্যে আমি যৌবন থেকে তাঁকে চিনি। যেসব ইস্যুতে সিপিএম, বিমানবাবুরা অভিযুক্ত সেই অংশটা নিশ্চয়ই বলা হবে। তার মানে ব্যক্তিগতভাবে বিমানবাবুকে অশ্রদ্ধা করার সম্পর্ক নেই। শুভেন্দু নাকি সিপিএম বিরোধী নেতা ছিল। এখন একার দম শেষ। এখন সিপিএমকে গুডবুকে নেওয়ার জন্য সিপিএম ভাল, সিপিএম নেতারা ভাল। এসব বলতে হচ্ছে।’
ঠিক কী বলেছেন বিমান বসু? শুভেন্দুর মহাজোটের বার্তা সরাসরি খারিজ করলেন বিমান বসু। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বলেন, ‘শুভেন্দু কী বলেছেন তাতে কিছু যায় আসে না। আমার নাম কেন নিল জানি না। আমাদের লড়াই তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির বিরুদ্ধে। তৃণমূলকে হঠাতে বিজেপির সঙ্গে একই কর্মসূচিতে সামিল হওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। ধর্মনিরপেক্ষ ও সমমনোভাবাপন্ন দলগুলিকে নিয়েই আমরা লড়ব। বিজেপি পরিচালিত হয় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের মাধ্যমে। তার সঙ্গে বারবর লড়াই করে আসছে সিপিএম। ফলে আরএসএস পরিচালিত বিজেপির সঙ্গে এক কর্মসূচিতে সামিল হওয়ার প্রশ্নই নেই।’