এতদিন মূলত জেলায় ‘তাঁদের’ উপস্থিতি টের পাওয়া যাচ্ছিল। এবার কলকাতার বুকেও নিজেদের উপস্থিতি জানান দিলেন ‘দাদার অনুগামীরা’।
শনিবার সকালে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ছবি-সহ একাধিক ফ্লেক্স-পোস্টার দেখতে পাওয়া গিয়েছে। তাতে লেখা ছিল, 'বিনম্রতায় হও অবনত, প্রতিবাদে ঠিক হবে তত উদ্ধত। মধুলোভী করে ক্ষমতা মিছিল, তুমি ছুঁড়ে দাও মৌচাকে ঢিল।দেহরক্ষীর ঘেরাটোপে ওরা, শুধু আজ গদি আগলায়। তুমিই আবার সূর্য জ্বেলেছো, সকাল আনবে বাংলায়।'
তবে কে বা কারা সেই ফ্লেক্স লাগিয়েছে, তা স্পষ্ট হয়নি। ‘দাদার অনুগামীরা’-দের সেই ফ্লেক্সে কারও নাম করা হয়নি। নেই তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও নামগন্ধও। কিন্তু নিশানায় যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আছে, তা প্রতিটা লাইনেই বোঝা গিয়েছে। তাতে আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে রাজনীতি। বিশেষত কলকাতায় সেই ‘দাদার অনুগামীরা’ পৌঁছে যাওয়ায় চর্চা আরও বেড়েছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এতদিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে জল মাপছিলেন ‘দাদার অনুগামীরা’। এবার আরও একধাপ এগিয়ে কলকাতায় নিজেদের ‘ক্ষমতা’ পরখ করে নিতে চাইছেন তাঁরা। তার ফলে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকেও চাপে রাখা যাবে।
এমনিতেই ঘাসফুল শিবিরের তরফে দ্বিমুখী কৌশল নেওয়া হয়েছে। একদিকে নাম না করে শুভেন্দুকে আক্রমণ শানাচ্ছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার সদ্ভাবের বার্তা দিচ্ছেন সুখেন্দুশেখর রায়, ব্রাত্য বসু, পার্থ চট্টোপাধ্যায়রা। ‘বড়’ নেতাও বলা হচ্ছে। শুভেন্দুও অবশ্য কম কিছু যান না। তিনিও কখনও ‘বড়’ ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। কখনও আবার জানাচ্ছেন, দল থেকে তাঁকে ‘তাড়ানো’ হয়নি বা তিনি নিজেও দল ‘ছাড়েননি’। তবে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেননি শুভেন্দু।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দু'পক্ষই যেমন স্নায়ুর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, তেমনই জল মাপা হচ্ছে। কেউই প্রথম ‘ধাক্কা’ দিতে চাইছে না। তাই শুভেন্দু-জল্পনা এখনই শেষ হচ্ছে না। বরং বুঝেশুনে এগোবে সংশ্লিষ্ট মহলের।