সোমবার রাজ্য বিধানসভায় আয়োজিত তৃণমূল কংগ্রেসের পরিষদীয় দলের বৈঠকে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা হাবড়ার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর, তারপরই জ্যোতিপ্রিয় ওরফে বালুর বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক মনে করছেন, যত দ্রুত সম্ভব জ্যোতিপ্রিয়র জামিনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়া উচিত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর। যাতে ফের জ্যোতিপ্রিয়কে কারাগারে ঢোকানো সম্ভব হয়।
কিন্তু, কেন একথা বলছেন শুভেন্দু? কারণ, এদিনের এই পরিষদীয় বৈঠকে মমতা সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তাঁর অভিযোগ, জ্যোতিপ্রিয়র বিরুদ্ধে কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। সেই কারণেই তিনি জামিন পেয়ে গিয়েছেন। তাঁকে আর জেলের আটকে রাখা সম্ভব হয়নি। মমতার স্পষ্ট বার্তা, স্রেফ রাজনৈতিক কারণে জ্যোতিপ্রিয়কে আটকে রাখতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং লম্বা সময় ধরে কারাগারে বন্দি করে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
মমতার এই অবস্থানকেই হাতিয়ার করেছেন শুভেন্দু। তাঁর পালটা বক্তব্য, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তার উপর তাঁকে নিয়ে খোদ রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেসব মন্তব্য করছেন, তাতে বিচারব্যবস্থা ও তদন্ত প্রক্রিয়া প্রভাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
এই প্রেক্ষাপটে শুভেন্দু মনে করেন, রেশন দুর্নীতিতে অন্যতম অভিযুক্ত, প্রভাবশালী জ্যোতিপ্রিয়কে অবিলম্বে ফের জেলে ঢোকানো উচিত। আর, সেই কারণেই ইডি-এর উচিত, জ্যোতিপ্রিয়র জামিনকে আইনত চ্যালেঞ্জ করা।
প্রসঙ্গত, সোমবারের বৈঠকে মমতার গলায় যাঁদের জন্য সহমর্মিতা ও প্রশংসার সুর শোনা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম জ্যোতিপ্রিয়। লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এই ঘটনার ঠিক একদিন আগেই (রবিবার) নিজের বিধানসভা এলাকায় যান বালু। প্রায় ১৫ মাস পর হাবড়ায় পা রাখেন তিনি।
কথা বলেন স্থানীয় পুর কাউন্সিলরদের সঙ্গে, দলের একটি কার্যালয় উদ্বোধন করেন এবং দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের দ্বারা আয়োজিত চারটি পিকনিকেও যোগ দেন। যা দেখে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের অনুমান, ছাব্বিশের ভোটের আগেই মমতার বড় ভরসা জ্যোতিপ্রিয় ফের একবার পুরোদমে রাজনীতির ময়দানে নামতে পারেন।
তেমনটা হলে সেটা বিজেপির জন্য মোটেও সুখবর নয়। এই প্রেক্ষাপটে জ্যোতিপ্রিয়কে নিয়ে ইডি-এর উদ্দেশে শুভেন্দুর বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।