বাঘাযতীনে চারতলা ফ্ল্যাটবাড়ি হেলে পড়ার ঘটনায় কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে নিশানা করতে গিয়ে চূড়ান্ত হাস্যরস ও 'সৃষ্টিশীলতা'র পরিচয় দিলেন বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বৃহস্পতিবার সকালে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেছেন শুভেন্দু। সেই পোস্টে রয়েছে একটি 'ক্রিয়েটিভ' এবং তার ক্যাপশন হিসাবে কিছু লেখা।
সেই ক্রিয়েটিভের বাঁদিকে রয়েছে ইতালির বিশ্ববিখ্য়াত স্থাপত্য় তথা আধুনিক জগতের অন্যতম বিস্ময় - লিনিং টাওয়ার অফ পিসা। এর ঠিক পাশেই, ক্রিয়েটিভের ডানদিকের অংশে রয়েছে বাঘাযতীনের সেই হেলে পড়া বহুতল। যার উপরে শুভেন্দু ক্যাপশনে লিখেছেন - 'লিনিং টাওয়ার অফ পিসি'!
কেন শুভেন্দু এহেন একটি ক্যাপশন দিলেন, তার ব্যাখ্যায় না গিয়ে বরং দেখে নেওয়া যাক, নন্দীগ্রামের বিধায়ক ওই পোস্টে আর কী লিখেছেন! তিনি সরাসরি নিশানা করেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে।
ববিকে উদ্দেশ করে শুভেন্দু লিখেছেন,'কলকাতার আধুনিক স্থপতি; মেয়র জনাব ফিরহাদ হাকিম সাহেব কলকাতাকে এমনই সব স্থাপত্য বিস্ময়ে ভরিয়ে তুলছেন! গার্ডেনরিচ থেকে বাঘাযতীন, সিটি অফ জয় এখন সিটি অফ ভয় - এ পরিণত হয়েছে। বাসিন্দারা সারাক্ষণ উদ্বেগে রয়েছেন - এই বুঝি পাশের বাড়িটা তাঁদের উপর হেলে পড়ল।'
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে 'তৃণমূল-প্রোমোটার-কেএমসি'-এর মধ্যে অসাধু আঁতাঁত নিয়েও সরব হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, এই অসাধু আঁতাঁতে ভর করেই কলকাতা শহরে বেআইনিভাবে 'জলাজমি ভরাট করে বেআইনি নির্মাণ করা হচ্ছে। ত্রুটিপূর্ণ বহুতলের নকশায় অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে এবং ঘুষের বিনিময়ে বেআইনি নির্মাণ করা হচ্ছে'।
শুভেন্দুর আরও অভিযোগ, এতকিছু হওয়ার পরও 'পরিদর্শনের অভাব' পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে।
শুভেন্দুর এই পোস্ট দেখে নেট নাগরিকরা যে বেজায় মজা পেয়েছেন, তা ভালোই বোঝা যাচ্ছে। ইতিমধ্য়েই ৮ হাজারেরও বেশি মানুষ এই পোস্ট দেখেছেন। এটি রিপোস্ট করা হয়েছে প্রায় ২৫০ বার। সঙ্গে বহু নেট ইউজার মজার মজার সব কমেন্টও করেছেন।
প্রসঙ্গত, বাঘাযতীনে বহুতল হেলে পড়া নিয়ে ইতিমধ্যেই বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। সূত্রের দাবি, বেআইনিভাবে জলাজমি ভরাট করে এই বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছিল। ফলে বছর ১০-১১ যেতে না যেতেই বাড়ি হেলতে শুরু করে।
তারপর সেই বাড়ি সোজা করার জন্য অদক্ষ শ্রমিকদের কাজে লাগানো হয়। এমনকী, বাড়ি সোজা করার প্রক্রিয়া চলাকালীন সেখানে কোনও স্ট্রাক্চারাল ইঞ্জিনিয়রও ছিলেন না বলে অভিযোগ। ফলস্বরূপ - ভয়ঙ্করভাবে বাড়ির একতলার পিলার ও একাংশ ভেঙে যায় এবং বাড়িটি আরও বিপজ্জনকভাবে একদিকে হেলে পড়ে।
আরও বিস্ময়কর বিষয় হল, বেআইনি এই বাড়ি থেকে রীতিমতো পুরকরও আদায় করা হচ্ছিল। ফলত, এই ঘটনাা নিয়ে কলকাতা পুরনিগমের ভূমিকাও আতসকাচের তলায় চলে এসেছে।