'তালিবানপন্থীদের রমরমা'য় রাজ্যজুড়ে শিকেয় উঠেছে নারী নিরাপত্তা! এই অভিযোগ তুলে সরব হলেন শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেছেন তিনি। তাতে সংযুক্ত ভিডিয়োটিু প্রসঙ্গেই এই বার্তা দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
শুভেন্দুর পোস্ট করা ভিডিয়ো ফুটেজে কী রয়েছে?
এদিন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শুভেন্দু যে ১ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের ভিডিয়োটি পোস্ট করেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে, কোনও একটি গ্রাম্য এলাকার রাস্তায় বিবাদে জড়িয়েছে দুই পক্ষের কিছু মানুষ। কোনও কারণে প্রথমেই এক পক্ষ বাঁশ নিয়ে অন্য পক্ষের উপর হামলা চালায়।
যাঁদের উপর হামলা চালানো হয়, তাঁদের মধ্যে একজন পুরুষ রয়েছেন, যাঁর ডান হাতে প্লাস্টার করা রয়েছে। ওই পুরুষের সঙ্গেই এক মহিলাকে দেখা যায়। দুই পক্ষের বিবাদ, মারামারি কিছু দূর গড়ানোর পর মহিলা রাস্তায় পড়ে যান। সেই অবস্থাতেই অন্য় পক্ষের লোকজন তাঁকে বাঁশপেটা করে। পাশাপাশি, আরও একটি মেয়েকেও বাঁশ দিয়ে আঘাত করতে দেখা যায় হামলাকারী এক বৃদ্ধকে।
শুভেন্দুর দাবি:
রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা তাঁর পোস্টে দাবি করেছেন, মঙ্গলবার মালদা জেলার মোথাবাড়ি এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। শুভেন্দুর বক্তব্য, বিবাদের কারণ যাই হোক না কেন, প্রকাশ্য দিবালোকে এক মহিলাকে রাস্তায় ফেলে বাঁশ পেটা করা হচ্ছে! কতটা দুঃসাহস থাকলে আর বেপরোয়া হলে এমনটা করা যায়! এমন ঘটনা আরও একবার রাজ্যে নারী নিরাপত্তার বেহাল দশা তুলে ধরেছে বলে মনে করেন তিনি।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে, পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতিকে কার্যত আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ প্রশাসন এই ধরনের ঘটনায় কোনও পদক্ষেপ করতে পারছে না। আইনত যেটা তাদের করা উচিত। কারণ, রাজ্য সরকার তথা রাজ্যের শাসকদল তাদের হাত-পা বেঁধে রেখেছে।
শুভেন্দুর যুক্তি, বিশেষ এক শ্রেণির ভোটারদের সন্তুষ্ট করতে এবং তাঁদের ভোট যাতে কিছুতেই হাতছাড়া না হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই ধরনের ঘটনায় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে রাজ্য সরকার। পুলিশকেও একই কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। আর তার জেরেই পশ্চিমবঙ্গে 'তালিবানপন্থীদের রমরমা' ক্রমশ বাড়ছে বলেও তোপ দেগেছেন শুভেন্দু।
প্রসঙ্গত, আর জি কর মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টে নারী নিরাপত্তা নিয়ে নানা কথা উঠেছে। রাজ্য সরকারের আইনজীবীরা বলছেন, রাজ্যের নারীরা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। মানতে নারা বিপরীত শিবির।
এই প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট ভিডিয়োটি পোস্ট করে শুভেন্দুর সরাসরি প্রশ্ন, 'কোথায় নারী নিরাপত্তা? সুপ্রিম কোর্টের শুনানির সময় রাজ্যের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে তো মনে হয় যে রাজ্য সরকার নারী সুরক্ষার জন্য প্রাণপাত করে দিচ্ছে একেবারে! এই তার নমুনা?'
উল্লেখ্য, নারী নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠলেই রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকারি তথ্য টেনে এনে দাবি করে, কলকাতাকে বারবার দেশের নিরাপদতম শহরের শিরোপা দেওয়া হয়েছে। তাহলে রাজ্যের বিরোধী নেতারা নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কোন যুক্তিতে?
যদিও রাজ্য সরকারের এইসব যুক্তি মানতে নারাজ রাজনৈতিক সমালোচকরা। তাঁদের পালটা বক্তব্য, অপরাধ সংক্রান্ত যে পরিসংখ্য়ান রাজ্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রকে পাঠানো হয়, তাতে অনেক গলদ রয়েছে বলেই সরকারি খতিয়ানে কলকাতা তথা বাংলাকে নিরাপদ হিসাবে তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে।