কিছুদিন আগে স্বাস্থ্যভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন দেখা গিয়েছিল। তাতে বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছিল স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের। পরে অবশ্য ওই আন্দোলন উঠে যায়। এবার স্বাস্থ্য ভবনের পক্ষ থেকে কড়া নির্দেশিকা জারি হয়েছে। তাতে যখন তখন কাজের ব্যস্ত সময় স্বাস্থ্যভবনে আসতে পারবেন না ডাক্তারবাবুরা। স্বাস্থ্যভবন তো কোনও পর্যটন ক্ষেত্র নয়। এবার থেকে স্বাস্থ্য ভবনে আসতে গেলে সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল, এমএসভিপি অথবা বিভাগীয় প্রধানের চিরকুট নিয়ে আসতে হবে। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যভবনের বিশেষ সচিবের (স্বাস্থ্য শিক্ষা) এই নির্দেশ ঘিরে চর্চা তুঙ্গে।
কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে স্বাস্থ্যভবনে আসা যাবে না বলে বার্তা দেওয়া হয়েছে। একাধিক মেডিক্যাল কলেজের কর্তাদের এই মর্মে বার্তা দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সেই বার্তা এবার সমস্ত শিক্ষক চিকিৎসকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। এই নির্দেশ প্রকাশ্যে আসার পর জুনিয়র এবং সহকারী অধ্যাপক পদের চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ তুমুল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আসলে তাঁরাই এখানে অযথা আসেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, এখন স্বাস্থ্যভবনে ঘনঘন নানা শিক্ষক চিকিৎসককে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। তাঁদের যা কাজ তাতে এটা হওয়ার কথাই নয়।
আরও পড়ুন: ‘থ্রেট কালচার নিয়ে মামলা কাকে বলে দেখিয়ে দেব’, জুনিয়র ডাক্তারদের হুঁশিয়ারি কল্যাণের
কিন্তু এই কথা মানতে নারাজ চিকিৎসকদের একাংশ। চিকিৎসকদের সংগঠনের যুক্তি, স্বাস্থ্য ভবন কোনও ঘুরে বেড়াবার বা পর্যটনকেন্দ্র নয়। সরকারি হাসপাতালের জুনিয়র এবং সহকারী অধ্যাপক অথবা রেসিডেন্ট মেডিক্যাল অফিসার পদের চিকিৎকরা স্বাস্থ্যভবনে আসেন রোগী, হাসপাতাল বা খুব জরুরি ব্যক্তিগত কোনও প্রয়োজনে। যখন মেডিক্যাল কলেজের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের থেকে ন্যায্য দাবি মেলে না। তখন স্বাস্থ্যভবন একমাত্র ভরসার জায়গা হয়ে ওঠে। কিন্তু এখন থেকে বিভাগীয় প্রধান, অধ্যক্ষ বা অধিকর্তার সাক্ষর করা স্লিপ জমা দিতে হবে স্বাস্থ্যভবনে। সেটা না থাকলে তাঁদের কোনও অনুরোধ বা আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
এছাড়া স্বাস্থ্যভবনের স্পেশাল সেক্রেটারি (স্বাস্থ্য শিক্ষা) ডা. অনিরুদ্ধ নিয়োগীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটাকে নির্দেশ বা নির্দেশিকা বলা যাবে না। রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং নানা বিভাগের প্রধান অধ্যাপকদের হোয়াটসঅ্যাপে একটি বার্তা পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, জুনিয়র এবং সহকারী অধ্যাপক পদের ডাক্তারদের স্বাস্থ্যভবনে আসতে গেলে চিরকুটে লিখে নিয়ে আসতে হবে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য কর্তাদের মত, যেভাবে কাজের ব্যস্ত দিনে হাসপাতালে রোগী ফেলে পদোন্নতি ও বদলির জন্য স্বাস্থ্যভবনের নানা কর্তাদের ঘরে ঘোরাঘুরি চলছিল সেটা কাম্য নয়।