বিশ্ব দরবারে ‘কন্যাশ্রী’ আগেই স্বীকৃতি পেয়েছিল। এবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পও আন্তর্জাতিক মঞ্চে উঠে এল। যা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। রাজ্যের বিরোধীরা এই প্রকল্প নিয়ে সমালোচনা করলেও এই প্রকল্প যে বাংলার সকল স্তরের মানুষের কাজে এসেছে সেটা এবার প্রমাণিত হল। এই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে বেসরকারি নার্সিংহোমে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাওয়া যায়। বাড়ির মহিলাদের নামে এই কার্ড হয়ে থাকে। তবে এসবের জন্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে উঠে আসেনি ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প। আন্তর্জাতিক মঞ্চে উঠে এসেছে কারণ, ক্যানসার চিকিৎসা এবং ব্রেস্ট ক্যানসার রোগীদের কেমোথেরাপি সম্পূর্ণ করতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে করা যাচ্ছে বলে। তাই এই সাফল্যের কথা ‘দি ব্রেস্ট’ আন্তর্জাতিক জার্নালে উঠে এল।
এদিকে কয়েকদিনের মধ্যেই লন্ডন যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিদেশ মন্ত্রক থেকে ছাড়পত্র মেলায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য রাখবেন তিনি। এই সম্মান পেয়ে খুশি মুখ্যমন্ত্রী। তবে লন্ডন যাওয়ার আগে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প যে বিশ্ব–দুয়ারে উঠে এসেছে সেটা জেনে গেলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রকল্পের কথা সাত সমুদ্র পার করে বিদেশের মাটিতে তুলে ধরতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী বলে সূত্রের খবর। ক্যানসার মারণ ব্যাধি। সেটার চিকিৎসা করাতে গেলে মানুষের ঘটি–বাটি–চাটি হয়ে যায়। এমন একটা রোগের চিকিৎসায় খরচ কমিয়ে সাহায্য করার বিষয়টিকে সিলমোহর দিচ্ছে বিশ্বের অন্যতম সেরা চিকিৎসা সম্মেলন ‘সেন্ট গ্যালন ব্রেস্ট ক্যানসার কনফারেন্স ২০২৫’। যা বাংলার কাছে গর্বের।
আরও পড়ুন: হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিতেই পেলেন বিশেষ দায়িত্ব, নতুন পদে তাপসী
এই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বাংলায় ক্যানসার চিকিৎসা করানো এখন অনেক সহজ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড রোগীদের যেভাবে সহায়তা করেছে সেটা নিয়েই গবেষণাপত্র পাঠ করতে বাংলার চিকিৎসক ডাক পেয়েছেন অস্ট্রিয়ার সম্মেলনে। ‘সেন্ট গ্যালন ব্রেস্ট ক্যানসার কনফারেন্স ২০২৫’ বসছে অস্ট্রিয়ায়। সেখানের আন্তর্জাতিক মঞ্চে উঠে আসবে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প। এটা যে কম গর্বের বিষয় নয় তা সকলেই বুঝতে পারছেন। আজ ১৩ মার্চ এই গবেষণাপত্র পাঠ করার কথা বিশিষ্ট চিকিৎসকের। বিশিষ্ট অঙ্কোসার্জন ডাঃ সৌমেন দাস এবং আরও পাঁচজন চিকিৎসকের সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প ব্রেস্ট ক্যানসার রোগীদের চিকিৎসার খরচ ৭০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। এমনকী এই প্রকল্পে কেমোথেরাপির ‘ট্রিটমেন্ট কমপ্লিসন রেট’ ভারতের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এত ঘটনা ঘটে গিয়েছে সেটা এখন সামনে আসছে। বাংলার মানুষের উপকারে স্বাস্থ্যসাথী যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবার তা উঠে আসবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। নয়াবাদ এবং সিঁথির দুই বেসরকারি হাসপাতালের স্টেজ ১–৩ পর্যায়ের ব্রেস্ট ক্যানসার রোগীদের নিয়ে হয় এই সমীক্ষা। যেখানে মেলে এই সাফল্যের তথ্য। এই বিষয়ে প্রধান সমীক্ষক চিকিৎসক সৌমেনবাবু বলেন, ‘মৃত্যুহার দু’ধরনের রোগীদের মধ্যেই ছিল। তবে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সীমাবদ্ধতার কথা বলা হয়েছে এই সমীক্ষায়।’ এই তথ্য মিলেছে বর্তমান পত্রিকা থেকে।