স্বাস্থ্যসাথী কার্ডকে সামনে রেখে বাড়তি টাকা কামাতে শুরু করেছেন বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল। এই অভিযোগ বারবার উঠেছে। স্বাস্থ্য দফতরও এই অভিযোগ পেয়েছে। রোগী হাসপাতালে ভর্তি না থাকলেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে তাঁর নামে বিল বেড়ে উঠেছে। ডাক্তার অপারেশন করেননি। অথচ হাসপাতাল দাবি করছে, রোগীর অপারেশন হয়ে গিয়েছে। এমন নানা অভিযোগ সামনে এসেছে। আর তাই এবার থেকে বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের ক্ষেত্রে নয়া ফরমান জারি করল রাজ্য সরকার। সুতরাং স্বাস্থ্য দফতরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাজ্যজুড়ে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে যুক্ত সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালে চালু করতেই হবে ‘জিও ট্যাগিং’।
বিশেষ করে আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার পর যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল গোটা রাজ্যে তাতে গরিব মানুষজন বাধ্য হয়েছিলেন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে। তাও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে। আর তখনই নানা দুর্নীতির তথ্য স্বাস্থ্য দফতরের সামনে এসে পড়ে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ টাকা বিল বাড়তেই থাকে। তাই এবার পদক্ষেপ করার পথে হাঁটল স্বাস্থ্য দফতর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাগশিপ প্রজেক্ট স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে রাজ্য স্বাস্থ্যদফতর আনল ‘জিও ট্যাগিং’ ব্যবস্থা। এবার থেকে রাজ্যজুড়ে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে যুক্ত সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালে চালু করতে হবে ‘জিও ট্যাগিং’।
আরও পড়ুন: ‘কেন অধিবেশন বন্ধ থাকবে? কেউ কি মারা গিয়েছেন?’ শুভেন্দুর প্রশ্নের জবাব শোভনদেবের
‘জিও ট্যাগিং’ বিষয়টা কী? হাসপাতালে রোগী ভর্তি হলেই অ্যাপের মাধ্যমে ওই রোগীর ছবি তুলে পাঠাতে হবে। অপারেশনের আগে, পরে এবং ডিসচার্জের সময় ছবি তুলে পাঠাতে হবে। সেক্ষেত্রে এআই ব্যবহার করে চলবে গোটা সিস্টেম। এখানেই শেষ নয়, রোগীর নাম, হাসপাতালের নাম এবং সেখানে থাকার দিনক্ষণের সঙ্গে ঠিক কোন জায়গার ছবি তোলা হয়েছে, সেই তথ্যও দিতে হবে। আর ওই অ্যাপ চলবে শুধুমাত্র হাসপাতালের ৫০ মিটারের মধ্যে। রোগীর ছবি, তথ্য, লোকেশন এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য যাচাই করবে এআই। তথ্য অসত্য হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও পদাধিকারীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। টিপিএ বা দায়িত্বপ্রাপ্ত এজেন্সিকে দেখতে হবে রিয়েল টাইম ছবি এবং তথ্য মিলেছে কিনা।
এবার থেকে বেসরকারি হাসপাতালকে রোগীর অপারেশন থেকে শুরু করে যাবতীয় চিকিৎসার শুরু এবং শেষ জানাতে হবে। সেই তথ্য আপলোড করতে হবে। একবার যে তথ্য আপলোড হয়ে যাবে তা আর এডিট করা যাবে না। ক্লেম যখনই যাচাই করা হবে তখনই টিপিএ’রা অপারেশন এবং চিকিৎসার শুরু ও শেষের সময় দেখে নেবেন। এই সমস্ত তথ্য এআই–এর মাধ্যমে যাচাই করে দেখবে স্বাস্থ্যসাথী শাখা। আর বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসা এবং অপারেশনের সঙ্গে যুক্ত ডাক্তারদের সম্পর্কিত তথ্যও হাসপাতালকে জানাতে হবে।