আরজি করে তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় পুলিশের দুই তদন্তকারী আধিকারিক এবং অন্য এক কর্মীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হল। বৃহস্পতিবার শিয়ালদহ অতিরিক্ত দায়রা আদালতে ওই তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডে প্রাথমিকভাবে টালা থানার পুলিশ তদন্ত করেছিল। পরে সেই তদন্তের জন্য সিট গঠন করা হয়। এবং তারও পরে মামলার তদন্তভার যায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বা সিবিআই-এর হাতে।
এই ঘটনায় রাজ্য সরকার স্থানীয় পুলিশের তদন্তে আস্থা প্রকাশ করলেও নিগৃহীতার পরিবার এবং জুনিয়র চিকিৎসকরা বারবার পুলিশের তদন্তে অনাস্থা ও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এমনকী, নানাভাবে তদন্ত প্রক্রিয়া প্রভাবিত করারও অভিযোগ উঠেছে।
এই সব কারণেই বৃহস্পতিবার আদালতে পুলিশের তিন প্রতিনিধির সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সূত্রের দাবি, ওই দিনও ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়।
সেই শুনানিতেই কলকাতা পুলিশের সংশ্লিষ্ট বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট-এর দুই সদস্যের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। পাশাপাশি, টালা থানার মালখানার দায়িত্বে থাকা কর্মীকেও আদালতে সাক্ষী হিসাবে পেশ করা হয়।
প্রসঙ্গত, উত্তর কলকাতার আরজি কর হাসপাতালটি টালা থানা এলাকার মধ্যে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই, তরুণী চিকিৎসকের অপমৃত্যুর ঘটনা সামনে আসার পর ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া সমস্ত তথ্যপ্রমাণ এবং যাবতীয় প্রয়োজনীয় নমুনা টালা থানার মালখানায় জমা করা হয়।
এক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছিল, মালখানায় জমা রাখা ওইসব তথ্যপ্রমাণ লোপাট করার এবং বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আদৌ তেমন কোনও ঘটনা ঘটেছে কিনা, তা জানতেই মালখানার দায়িত্বে থাকা কর্মীকে আদালতে ডেকে পাঠিয়ে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
এদিকে, আরজি কর কাণ্ডের পর তিনমাসেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। ঘটনার তদন্তভার রাজ্যের পুলিশবাহিনীর হাত থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হলেও তদন্ত প্রক্রিয়ায় তেমন কোনও গতি দেখা যাচ্ছে না বলে দাবি মৃতার পরিবারের সদস্যদের।
প্রায় একই অভিযোগ তোলা হয়েছে এই ঘটনার প্রতিবাদে আন্দালনে অবতীর্ণ হওয়া জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফ থেকেও। এখনও পর্যন্ত এই মামলার মূল অভিযুক্ত হিসাবে সঞ্জয় রায়ের কথাই জানা গিয়েছে। যদিও সঞ্জয়ের দাবি তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। এমনকী, আদালত চত্বরে পুলিশের গাড়ির ভিতর থেকেই তাঁকে ফাঁসানোর জন্য কলকাতা পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করেছেন সঞ্জয়।
আর, তারপর থেকেই সঞ্জয়কে ঘিরে আদালত চত্বরে পুলিশের অতিসক্রিয়তা দেখা যায়। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের অনুমান, আদালত চত্বরে মুখ খোলার কারণেই পরবর্তীতে সঞ্জয়ের ভার্চুয়াল শুনানি শুরু করা হয়।