ট্যাংরার কিশোরীকে অপহরণ করে পাচার করা হয়েছিল। কলকাতা পুলিশ তদন্তে নেমে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদ থেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুত্ব থেকে প্রেম—তা থেকেই রঙিন স্বপ্ন নিয়ে ঘর ছেড়েছিল কিশোরী। কিন্তু ট্যাংরা থেকে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আর সেখানে গিয়ে স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। কারণ গোয়ালঘরে গরু–ছাগলের সঙ্গে তাকে বন্দি রাখা হয়েছিল। আর মাঝেমধ্যেই সেখানে চলত যৌন নির্যাতন।
কেমন করে সন্ধান পেল পুলিশ? পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে নেমে কিশোরীর বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে জানা যায় সে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি অ্যাক্টিভ থাকত। তখন মেয়েটির সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ঘেঁটে এই প্রণয়ের কথা প্রকাশ্যে আসে। ট্যাংরা থেকে তাকে অপহরণের বিষয়টি সহজেই বোঝা যায়। তখন তার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল ঘেঁটে, মোবাইল লোকেশন ট্র্যাক করে পাচারকারীদের নাগাল পায় পুলিশ। ট্যাংরার ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয় ফৈজাবাদ থেকে।
ঠিক কী ঘটেছিল ট্যাংরায়? স্থানীয় সূত্রে খবর, সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুত্ব করতে গিয়ে পাচারকারীর খপ্পরে পড়ে যায় ১৬ বছর বয়সের কিশোরী। ট্যাংরা থেকে তাকে অপহরণ করে পাচারকারীরা। কিশোরী টিউশন পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। বাড়ি না ফেরায় চিন্তায় পড়েন বাবা–মা। তখন মেয়েটির বন্ধুদের ফোন করেও কোনও খোঁজ না মেলায় ট্যাংরা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
তারপর ঠিক কী ঘটল? ট্যাংরা থানা সূত্রে খবর, তদন্তে নেমে কিশোরীর মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে পুলিশ। লোকেশন মিলিয়ে হাওড়ায় পৌঁছয় পুলিশ। কিন্তু কিশোরীকে পাওয়া যায়নি। পরের লোকেশন খড়্গপুর দেখায়। বোঝা যায় কিশোরী ট্রেনে করে যাচ্ছে। এরপর মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়। চারদিন পরে কিশোরী বাড়িতে ফোন করে জানায় তাকে আটকে রাখা হয়েছে। তারপর কিশোরীর ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল থেকে রোশন সিং নামে এক যুবকের খোঁজ মেলে। তার ফোন নম্বর জোগাড় করে ট্র্যাক করা হয়। গ্রেফতার করা হয়েছে রোশন সিং নামে অভিযুক্ত যুবককে। তার বিরুদ্ধে অপহরণ, নাবালিকাকে ধরে আটকে রাখা, ধর্ষণ এবং পকসো মামলার ধারা দায়ের করা হয়েছে। রোশন নারী পাচারের সঙ্গে যুক্ত।