বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের বিষয়ে সরব বিজেপির শীর্ষ স্থানীয় নেতারা। শুভেন্দু অধিকারী তো এও বলেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে ১ কোটি শরণার্থী ভারতে চলে আসবে। তবে দেখা গিয়েছে, সীমান্তে বিএসএফ কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে আসার চেষ্টা করা হিন্দুদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এই নিয়ে সরব হয়েছিলেন মেঘালয় এবং ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়। তবে গতকাল এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি লেখেন, 'পৃথিবীতে হিন্দুর উপর অত্যাচার শুধু পাকিস্তান বা বাংলাদেশে হয়, অন্য কোথাও হয় না… তার মানে এই নয় যে সে সব হিন্দুকে ভারতে নিয়ে আসতে হবে।' (আরও পড়ুন: জার্মানিতে 'প্রাক্তন মুসলিমের' হামলায় আহত ৭ ভারতীয়, ঘটনায় মুখ খুলল দিল্লি)
আরও পড়ুন: 'ভারতকে খাটো করে দেখবেন না', বাংলাদেশকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি মিঠুনের
গতকাল বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদনের লিঙ্ক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ পোস্ট করেন তথাগত রায়। সেই প্রতিবেদনে তথাগত রায়কে উদ্ধৃত করে 'বাংলাদেশকে চাপে রাখার' কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি দিল্লির প্রথম সারির স্ট্র্যাটেজিক থিঙ্কট্যাঙ্ক মনোহর পারিকর আইডিএসএ-র সিনিয়র ফেলো স্মৃতি এস পট্টনায়কের মতামতও নেওয়া হয়েছে। স্মৃতি পট্টনায়েক সেখানে বলেছিলেন, 'ভারত ইজরায়েল নয়। তারা যেমন সব ইহুদির দায়িত্ব নিয়েছে, ভারত তেমন সব হিন্দুর দায়িত্ব নিতে পারে না।' এই নিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তথাগত রায় লেখেন, 'শ্রীমতী পট্টনায়ক বলেছেন ভারত ইস্রায়েল নয়, তারা যেমন সারা বিশ্বের ইহুদিদের দায়িত্ব নিয়েছে ভারত তেমন করে সমস্ত হিন্দুর দায়িত্ব নিতে পারে না। তাহলে যেখানে হিন্দুর উপর অত্যাচার হবে ভারতের কর্তব্য কি সেটা চুপ করে দেখা?'
এরপর তথাগত রায় লেখেন, 'সেসব কিছু নয়। পৃথিবীতে হিন্দুর উপর অত্যাচার শুধু পাকিস্তান বা বাংলাদেশে হয়, অন্য কোথাও হয় না। দক্ষিন আমেরিকায় সুরিনাম থেকে যুক্তরাজ্য ও আরব দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে হিন্দুরা ছড়িয়ে আছে এবং সেদেশের মানুষের সঙ্গে সুখেশান্তিতে বাস করছে। কিন্তু সমস্যা যেখানে আছে সেখানে ভারতকে সক্রিয় হতেই হবে। তার মানে এই নয় যে সে সব হিন্দুকে ভারতে নিয়ে আসতে হবে। কিন্তু এমন চাপ সৃষ্টি করতে হবে যে তারা হিন্দু নির্যাতন থেকে বিরত থাকে। আজ ভারতের সেই শক্তি আছে।'
এদিকে ভারত কীভাবে বাংলাদেশের ওপর চাপ বাড়াতে পারে? এই নিয়ে বিবিসি বাংলাকে তথাগত রায় বলেছেন, 'বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ডাউনগ্রেড করা যেতে পারে। বাংলাদেশের জন্য ভারতের আকাশসীমা বন্ধ করা যেতে পারে। বাংলাদেশগামী জাহাজের জন্য ভারতের সমুদ্রসীমাও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে। বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এই আবহে কাঁচা মাল রফতানি বন্ধ করতে পারে ভারত। আলু-পেঁয়াজ-চাল-ডিমের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের রফতানিও নিষিদ্ধ করা হতে পারে। নদীগুলোর জলও আটকে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে।'