রাজ্যের ৬ বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে ভরাডুবি বিজেপির। আরজি কর আন্দোলনের ঝাঁঝ সামলে ফের ঘাসফুল ফুটল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। এই আবহে বঙ্গ বিজেপির 'বেহাল দশা' নিয়ে বিস্ফোরক বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায়। সুকান্তকে 'পার্টটাইম সভাপতি' আখ্যা দিয়ে তাঁর মত, জনগণ মনে করছে যে মমতা এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, পরিস্থিতি না পাল্টালে রাজ্যে বিজেপির কোনও আশা নেই। তাঁর কথায়, 'তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা আখ্যান তৈরি না হলে মমতা চিরকাল পশ্চিমবঙ্গ শাসন করবেন।'
এক দীর্ঘ সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তথাগত রায় লেখেন, 'পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির হল একটি বিপর্যস্ত দল। তারা রাজ্যের দ্বিতীয় দল হিসেবেই রয়ে গিয়েছে। তবে সেটা দলের সংগঠনের কারণে নয়। বরং হিন্দু জনগণের একটি অংশের অন্ধ সমর্থনের কারণে। এটা অকল্পনীয় যে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে বিজেপি একজন পার্টটাইম সভাপতির দ্বারা পরিচালিত হয়। তিনি আবার কেন্দ্রে প্রতিমন্ত্রী হিসেবেও নিজের দায়িত্ব সামলান।' নিজের পোস্টে তিনি নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ এবং জেপি নড্ডাকে ট্যাগও করেন।
নিজের পোস্টে তথাগত রায় আরও লেখেন, 'অভিষেকের বিরুদ্ধে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত মামলার মুখে নিষ্ক্রিয়তার জন্যে জনগণ মনে করছে যে মমতা এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে। এটা না পাল্টালে রাজ্যে বিজেপির কোনও আশা নেই। মমতা এমন একটি আখ্যান তৈরি করেছেন যে বিজেপি হল একটি হিন্দিভাষী বাঙালি বিরোধী দল। পাল্টা আখ্যান তৈরি না হলে মমতা চিরকাল পশ্চিমবঙ্গ শাসন করবেন। এই বিষয়গুলো সবই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আওতায় পড়ে। তাই তাঁদের এই বিষয়ে বিবেচনা করার জন্যে অনুগ্রহ করব। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আর মাত্র ১৭ মাস বাকি।'
উল্লেখ্য, গতকাল প্রকাশিত হয় সিতাই, মাদারিহাট, তালড্যাংরা, মেদিনীপুর, হাড়োয়া এবং নৈহাটি উপনির্বাচনের ফলাফল। এই কোনও আসনেই বিজেপি সেভাবে লড়াই দিতে পারেনি। সিতাই এবং হাড়োয়াতে তৃণমূল জিতেছে লক্ষাধিক ভোটে। হাড়োয়াতে তো বিজেপি তৃতীয় স্থানে নেমে যায়। এদিকে মাদারিহাট আসনটি বিজেপির থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। এই আবহে সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, 'উপনির্বাচনে যেমন ফলাফল হয় তেমনই হয়েছে।' প্রসঙ্গত, ফল প্রকাশের পর দেখা গিয়েছে, মাদারিহাটে তৃণমূল ২৮,১৬৮ ভোটে জিতেছে। সেখানে তাদের ভোটের হার ৫৪.০৫ শতাংশ। কোচবিহারে সিতাই কেন্দ্রে তৃণমূল ১,৩০,৬৩৬ ভোটে জিতেছে। সেখানে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোটের হার ৭৬.০৮ শতাংশ। মেদিনীপুর কেন্দ্রে তৃণমূল জয় পেয়েছে ৩৩,৯৩৬ ভোটে। সেখানে তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ৫৩.৪৪ শতাংশ। হাড়োয়া কেন্দ্রে তৃণমূল জয় পেয়েছে ১,৩১,৩৮৮ ভোটে। সব মিলিয়ে তৃণমূল ৭৬.৬৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে সেখানে। তালড্যাংরা কেন্দ্রে তৃণমূল জয়ে পেয়েছে ৩৪,০৮২ ভোটে। শতাংশের নিরিখে সেখানে তৃণমূল পেয়েছে ৫২.০৭ শতাংশ। আর নৈহাটি কেন্দ্রে তৃণমূল জয় পেয়েছে ৪৯,২৭৭টি ভোটে। এই আসনে তাদের প্রাপ্ত ভোট হল ৬২.৯৭ শতাংশ।