বিগত একবছরেরও বেশি সময় ধরে রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে। এই নিয়ে সিবিআই, ইডি তদন্তে নেমে শাসকদলের একাধিক হেভিওয়েট নেতাকে গ্রেফতার করেছে। আর এবার নিয়োগের ক্ষেত্রে ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র জমা দেওয়ার অভিযোগে কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের হয়েছে মামলা। শুধু তাই নয়, অভিযোগটি সত্যি বলে মেনে নিয়েছেন বেশ কয়েকজন জেলাশাসক। শীঘ্রই ওই সব শংসাপত্র বাতিল করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে আদালতকে। মামলাকারীদের অভিযোগ, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ, বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থীকে তফসিলি জনজাতি না হওয়া সত্ত্বেও শংসাপত্র দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তা দেখিয়ে চাকরিও পেয়ে গিয়েছেন অনেকে। ভুয়ো সংশাপত্র সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট মহকুমাশাসকদের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে হাই কোর্ট।
প্রসঙ্গত, ‘ভুয়ো’ জাতিগত শংসাপত্র ব্যবহার করার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয় সম্প্রতি। মামলাটি করেন হেমাবতী মাণ্ডি সহ ৩ জন চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের অভিযোগ, সঠিক শংসাপত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁদের বঞ্চিত করা হয়েছে। বিচারপতি বিশ্বজিত বসুর এজলাশে মামলাটির শুনানি হচ্ছে। ভুয়ো শংসাপত্র ব্যবহার করে চাকরি পেয়েছেন, এমন ৫৫ জনের একটি তালিকা বাছাই করে আদালতের সামনে তুলে ধরেন মামলাকারীরা। সেই মামলার শুনানি চলাকালীন মহকুমাশাসকরা আদালতে জানিয়েছেন, ভুয়ো শংসাপত্রের বিষয়ে তাঁরা অবগত হতেই পদক্ষেপ করেছেন। ভুয়ো নথিগুলিকে বাতিল করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এদিকে মামলায় উল্লেখিত ৫৫ জন শিক্ষকের মধ্যে ৩৩ জনের রিপোর্ট জমা পড়েছে আদালতে। তফসিলি জনজাতির ভুয়ো শংসাপত্রের সেই তালিকায় রয়েছেন ঠাকুর, রায়, বড়ুয়া, রাউত, দাস, কর্মকার, ঘোড়ুই, মাহাতো, হাসিবের মতো পদবিধারীরা।
মণ্ডল পদবির কয়েক জনকে 'ভুল করে' তফসিলি জনজাতির সংসাপত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানান ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক। এদিকে মুর্শিদাবাদের লালবাগের মহকুমাশাসক জানান, মাহাতো পদবির কয়েক জনকে ভুল করে তফসিলি জনজাতি শংসাপত্র দেওয়া হয়েছিল। অনেক মহকুমাশাসক দাবি করেছেন, আবেদনকারীরাই ভুল তথ্য দিয়ে শংসাপত্র নিয়েছেন। প্রসঙ্গত, মামলাকারী অভিযোগ করেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের এক প্রার্থীকে বেদিয়া উপজাতির তফসিলি জনজাতি শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু মনে করিয়ে দেন মুসলমানরা তফসিলি জনজাতিভুক্ত হন না। যদিও বীরভূম সদরের মহকুমাশাসক জানান, সংশাপত্রে ভুল নেই।