পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবার থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা চালু করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। এ জন্য চিকিৎসকদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে পুরসভার পক্ষ থেকে। চিকিৎসকরা প্রশিক্ষণ নিলেই পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শুরু হবে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা।
একটি বেসকারি সংস্থার সমীক্ষা বলছে, শহরের মোট জনসংখ্যার ৪ শতাংশ থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত। কিন্তু যথা সময়ে পরীক্ষা না হওয়ার ফলে সমস্যা বাড়ে। চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হয়। ফলে রোগে চিকিৎসা আরও জটিল হয়। তাছাড়া আগে ভাবে থ্যালাসেমিয়া বাহক নির্ণয় করলে রোগের সংক্রমণও অনেকটা আটকে দেওয়া দেওয়া যায়। তাই থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই জন্য চিকিৎসকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ১৫ জন চিকিৎসককে দিল্লিতে পাঠানো হবে থ্যালাসেমিয়া টেস্ট প্রশিক্ষণের জন্য। এই দলের নেতৃত্বে থাকবেন চিকিৎসক অর্পণ মিত্র। যাঁরা এই প্রশিক্ষণে যাবেন তাঁদের আগামী তিন বছর ওই প্রকল্পে যুক্ত থাকার অঙ্গীকার করতে হবে। চিকিৎসকরা প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে এসে পুরসভার দেড়শ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেবেন।
থ্যালাসেমিয়া দু’প্রকার। আলফা থ্যালাসেমিয়া ও বিটা থ্যালাসেমিয়া। বিটা থ্যালাসেমিয়ার চেয়ে আলফা থ্যালাসেমিয়ার তীব্রতা কম। সাধারণত মা-বাবার থেকেই শিশুর মধ্যে বিটা থ্যালাসেমিয়া ছড়ায়। হাই পারফর্ম্যান্স লিকুইড ক্রোম্যাটোগ্রাফি (এইচপিএলসি) রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। রাজ্যের মাত্র ২৩টি সরকারি হাসপাতালে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। সেই জায়গায় কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্রেও থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা চালু হবে।
(পড়তে পারেন। পঞ্চায়েত দফতরের অফিসারদের পর্যালোচনা বৈঠকে ডাকল কেন্দ্র, নবান্নে এল চিঠি )
এক পুর স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রী সাধারণ রক্ত পরীক্ষা করান না। কিন্তু সন্তান প্রসবের আগে প্রসূতির রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন। কারণ মা ও বাবা দু’জনেই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে ২৫ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'ইকো ইন্ডিয়ার' সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে এই প্রকল্প নিয়েছে কলকাতা পুরসভা।
থ্যালাসেমিয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে ব্যাথা নিরাময় কেন্দ্র খুলবে পুরসভা।