জাতীয় লেকের তকমা দু’দশক আগেই পেয়েছে রবীন্দ্র সরোবর। এই লেকে বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষা করতে বিভিন্ন সময়ে সরব হয়েছেন পরিবেশ কর্মীরা। এবার তাদের দাবি মেনেই লেকের পাড় ভাঙা রুখতে পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। একেবারে পরিবেশবান্ধব উপায়ে লেকের পাড় বাঁধানো হবে বলে জানা গিয়েছে। এর জন্য ১ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নষ্ট হতে পারে পরিবেশ, রবীন্দ্র সরোবর চত্বরে বন্ধ সেলিব্রিটি ক্রিকেট
পুর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার ফুসফুস বলে পরিচিত রবীন্দ্র সরোবরের পাড় গাছের গুঁড়ি দিয়ে বাঁধানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুর দফতরের তরফে লেকের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কেএমডিএ- কে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই কাজের জন্য ১ লক্ষ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা ধার্য করা হয়েছে। নির্দেশে বলা হয়েছে ৬ মাসের মধ্যে পাড় বাঁধানোর কাজ শেষ করতে হবে। দ্রুত এই এই কাজ শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। পরিবেশকর্মীরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তাঁদের বক্তব্য, লেকে বিভিন্ন ধরনের প্রজাতির জলজ প্রাণী বাস করে। সব মিলিয়ে ১২টিরও বেশি প্রজাতির জলজ প্রাণী রয়েছে। এছাড়াও ৭৫ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে লেক চত্বরে। সব মিলিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় রবীন্দ্র সরোবরের গুরুত্ব অপরিসীম। এই রবীন্দ্র সরোবরের লেককে রক্ষায় অতীতেও বহুবার সরব হয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। ৭৩ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত এই রবীন্দ্র সরোবর লেক। এটি জাতীয় লেকের মর্যাদা পেয়েছিল ২০০৩ সালে।
পরিবেশ কর্মীরা জলে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা এবং জল দূষণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য গাছের গুঁড়ি দিয়ে পাড় বাঁধানোর দাবি জানিয়েছিলেন। সেইমতোই গ্রিন সিটি মিশনে লেকের পাড় বাঁধানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, গাছের গুঁড়ি দিয়ে পাড় বাঁধলে জীববৈচিত্র নষ্ট হয় না। জলজ প্রাণীরা ভালো থাকে। এতে বাস্তুতন্ত্র রক্ষা হয়। তবে পাথর দিয়ে পাড় বাঁধালে জীব বৈচিত্র্য নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পাশাপাশি লেকের জলে প্লাস্টিক এবং বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ফেলা রোখার উপরেও জোর দিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা।
পরিবেশবিদদের বক্তব্য, বড় গাছের গুঁড়ি দিয়ে পাড় বাঁধলে তা অনেক টেকসই ও মজবুত হয়। তবে শাল গাছের গুঁড়ি হলে সেটা ভালো হয়। যদিও কি গাছের গুঁড়ি পাড় বাঁধতে ব্যবহার করা হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। তবে সেই তালিকায় রয়েছে বট, আম, জাম, কাঁঠাল, শাল প্রভৃতি গাছের গুঁড়ি।