বারুইপুর স্টেশনের চার নম্বর প্লাটফর্মের পাশেই রয়েছে একটি জলাশয়। ওই জলাশয়টি কলপুকুর নামে পরিচিত। তবে দীর্ঘদিন ধরে আবর্জনা ফেলার কারণে সেই জলাশয়টির একাংশ প্রায় বুঝে গিয়েছে। এই অবস্থায় জলাশয়কে বাঁচাতে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। সেই সংক্রান্ত মামলায় জলাশয়টিকে অবিলম্বে পরিষ্কার করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ রেলকে ওই পুকুর পরিষ্কার করার নির্দেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বেআইনিভাবে জলাভূমি ভরাট করলেই কড়া পদক্ষেপ, নয়া নির্দেশিকা জারি করল সরকার
ওই পুকুর বাঁচানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরেই লড়াই করে আসছেন স্থানীয়রা। তাঁদের তৈরি সংগঠন রেল সহ বিভিন্ন দফতরের কাছে জলাশয়টি পরিষ্কার করার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও সুরাহা না মেলায় শেষে তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ময়লা ফেলার কারণে এই জলাশয়টির একাংশ বুঝে গিয়েছে। যার ফলে পরিবেশের বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কোনও দফতর পাশে না দাঁড়ানোর জন্য তাঁরা নিজেরাই সেই জলাশয় পরিষ্কার করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু সেই অর্থ জোগাড় করতে না পারায় তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হন। সেই সংক্রান্ত মামলায় সোমবার রেলকে এই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। দু মাসের মধ্যে জলাশয়টিকে পরিষ্কার করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে বলে নির্দেশ আদালতের। তবে তার আগে তিন সপ্তাহের মধ্যে পুরসভা এবং সংশ্লিষ্ট দফতরকে ওই জলাশয় পরিদর্শন করে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
আদালতের এই নির্দেশ প্রসঙ্গে সংগঠনের পক্ষ থেকে কৌশিক মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘জলাশয়টি প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছিল। আদালতের এই রায়ের পরে আশা করছি সেটি পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে। ’ তাঁর অভিযোগ, রেলের পাশাপাশি পুরসভার আবর্জনাও জলাশয়ে ফেলা হত। যদিও বারইপুর পুরসভার চেয়ারম্যান শক্তি রায়চৌধুরী দাবি করেছেন, পুরসভার কোনও আবর্জনা ওই জলাশয়ে ফেলা হয়নি। ওটা রেলের জায়গা। সেটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব রেলের। মামলাকারীদের আইনজীবী গৌতম সর্দার জানিয়েছেন, ‘ওই এলাকায় আরও একটি জলাশয়ের এরকম বেহাল দশা ছিল। সেটি সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তবে সেই কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে আশা করি কলপুকুরের ক্ষেত্রে তা হবে না।’ এ বিষয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ হাতে পেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।